রিফাতকে যেভাবে কোপানো হয়েছিল

বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে ভিডিওটির সূত্র সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য মেলেনি। আজ বুধবার ওই হত্যা মামলায় রায় ঘোষণা করা হয়েছে। রায়ে রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকাসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার পর আবার নৃশংস ওই হত্যাকাণ্ডের ভিডিওর বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, গত বছরের ২৬ জুন রিফাত শরীফ সকাল পৌনে ১০টার দিকে একটি মোটরসাইকেলে করে বরগুনা সরকারি কলেজের গেটের সামনে আসেন। এরপর তিনি কলেজের ভেতর প্রবেশ করেন। ভেতরে প্রবেশের কিছু সময় পর ঘটনাস্থলে আসেন এ হত্যা মামলার ২ নম্বর আসামি রিফাত ফরাজী। আরও দুই থেকে তিন মিনিট পর তাঁর দু–তিনজন সঙ্গী কলেজে ঢোকেন। রিফাত শরীফ ও তাঁর স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা ওরফে মিন্নি কলেজ থেকে বের হন। কিন্তু কলেজগেটে রিফাত ফরাজীর সঙ্গে দলবল দূর থেকে দেখে স্বামীকে টেনে আবার কলেজে ঢোকানোর চেষ্টা করেন আয়শা, কিন্তু পারেননি। টেনেহিঁচড়ে রিফাতকে বের করে এনেই প্রথমে কিলঘুষি শুরু করেন তাঁরা। এরপর কলেজের পূর্ব দিকে অপেক্ষমাণ নয়ন বন্ডের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় রিফাত শরীফকে। আয়শাও পেছনে পেছনে যান। নয়ন বন্ডের কাছে রিফাত শরীফকে নিয়ে যাওয়ার পর ১০-১২ জন তাঁকে ঘিরে ধরে পেটাতে শুরু করেন। এ সময় রিফাত ফরাজী ও তাঁর অপর এক সহযোগী দৌড়ে কাছাকাছি কোথাও লুকিয়ে রাখা দুটি রামদা নিয়ে আসেন। এর একটি রামদা নয়নের হাতে দেন রিফাত ফরাজী। পরে রিফাত ও নয়ন বন্ড দুজনে মিলে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন রিফাত শরীফকে। আর তাঁদের হাত থেকে স্বামীকে বাঁচাতে চেষ্টা করেন স্ত্রী আয়শা। রিফাত শরীফকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করার পর রিফাত ফরাজী ও নয়ন বন্ড রামদা হাতে সবার সামনে দিয়ে সঙ্গীদের নিয়ে ঘটনাস্থলের পশ্চিম দিকে চলে যান। তখন রিফাত শরীফের ক্ষতবিক্ষত শরীর থেকে ব্যাপক রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। পরে বেলা তিনটার দিকে বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা হত্যাকাণ্ডের স্থির চিত্র
সংগৃহীত

এদিকে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায়ে আজ তাঁর স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকাসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলার বাকি চার আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাকি পাঁচ আসামি হলেন রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজী (২৩), আল কাইউম ওরফে রাব্বি আঁকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম ওরফে সিফাত (১৯), রেজওয়ান আলী খান ওরফে টিকটক হৃদয় (২২) ও মো. হাসান (১৯)। আর খালাস পেয়েছেন রাফিউল ইসলাম, মো. সাগর, কামরুল ইসলাম সাইমুন ও মো. মুসা। তবে মুসা পলাতক আছেন।