ফরিদপুরের রুবেল ও বরকত আবার রিমান্ডে

ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তাঁর ভাই ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।


আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে দুই পক্ষের শুনানি শেষে ফরিদপুর সদরের ১ নম্বর আমলি আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফারুক হোসেন এ আদেশ দেন।


২০১৫ সালের ২৪ জুন রাতে ফরিদপুর শহরতলির বদরপুরে গণপিটুনিতে তিনজন নিহত হন। ওই মামলার আসামি হিসেবে বরকত ও রুবেলকে আজ আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ।

তবে রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করে আসামিপক্ষের আইনজীবী হাবিবুর রহমান আদালতে বলেন, বদরপুরে ওই দিন ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে তিনজন নিহত হন এবং এলাকাবাসীর হাতে দুজন আটক হন। পরদিন ২৫ জুন ওই এলাকার গ্রাম পুলিশ চিত্তরঞ্জন কর্মকার বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ ব্যক্তিকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল বাসার ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবর এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলে আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন।


পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলার মামলায় গত ৭ জুন গ্রেপ্তার করা হয় বরকত ও রুবেলকে। তাঁরা পরে বিভিন্ন মামলায় জবানবন্দিতে ২০১৫ সালে গণপিটুনিতে তিন ব্যক্তির নিহত হওয়ার ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন। পরে পুলিশের আবেদনে ওই মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করা হয় এবং ওই মামলায় রিমান্ডের আবেদন জানায় পুলিশ। রিমান্ড শুনানির সময় বরকত ও রুবেল আদালতে হাজির ছিলেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী হাবিবুর রহমান আরও জানান, এ মামলায় গত ৫ জুলাই আদালত বরকত ও রুবেলকে পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালত জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করে ১৬ জুলাই এ–সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তা গত ১৬ জুলাই আদালতে এ–সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন না দেওয়ায় ওই রিমান্ড আদেশ কার্যকারিতা হারায়।


ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ জামান বলেন, ২৩ আগস্ট ওই মামলায় বরকত ও রুবেলের পুনরায় রিমান্ড চাইলে আদালত ২৭ আগস্ট রিমান্ডের শুনানির দিন ধার্য করেন। সে অনুযায়ী আজ ওই দুই ভাইয়ের রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে আদালত দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ১৬ মে রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটে। সুবল সাহার বাড়ি শহরের গোয়ালচামট মহল্লার মোল্লা বাড়ি সড়কে অবস্থিত। এ ঘটনায় ১৮ মে সুবল সাহা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলার আসামি হিসেবে গত ৭ জুন বরকত, রুবেলসহ মোট ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।


ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের মামলা করে সিআইডি। সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ বাদী হয়ে গত ২৬ জুন ঢাকার কাফরুল থানায় মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ এনে মামলাটি করেন।

সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের বিরুদ্ধে ২ হাজার কোটি টাকার মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ বাদী হয়ে গত ২৬ জুন ঢাকার কাফরুল থানায় মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ এনে এ মামলাটি করেন। এ মামলায় গত ২৪ জুলাই সাজ্জাদ হোসেন ও ইমতিয়াজ হাসান আদালতে জবানবন্দি দেন। পরে তাঁদের গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ২১ আগস্ট দুই ভাইকে ফরিদপুর জেলে নিয়ে আসা হয়।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন