রূপগঞ্জে জমি অধিগ্রহণের নোটিশ প্রত্যাহারের দাবি

জমি অধিগ্রহণের নোটিশ প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন। রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের পিতলগঞ্জ চেয়ারম্যানবাড়ি এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মেট্রোরেল প্রকল্পের ডিপো বাস্তবায়নের জন্য জমি অধিগ্রহণের নোটিশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। রোববার এক সংবাদ সম্মেলন করে জমির মালিকেরা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের সঙ্গে সমঝোতা ছাড়াই নিয়মবহির্ভূতভাবে জমি অধিগ্রহণের চেষ্টা চলছে।

রোববার দুপুরে রূপগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের পিতলগঞ্জ চেয়ারম্যানবাড়ি এলাকায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আবু হোসেন ভূঁইয়া সভাপতিত্ব করেন। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, পিতলগঞ্জ দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ওবাইদুল মজিদ, সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল কাইয়ুমসহ স্থানীয় তিন শতাধিক জমিমালিক। সংবাদ সম্মেলনের আগে মানববন্ধন করতে চেয়েছিলেন আয়োজকেরা। অবশ্য প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়ায় মানববন্ধন করতে পারেননি তাঁরা।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের দেওয়া জমি অধিগ্রহণ নোটিশকে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করেন নোটিশ পাওয়া জমিমালিকেরা।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের দেওয়া জমি অধিগ্রহণ নোটিশকে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করেন নোটিশ পাওয়া জমিমালিকেরা। সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা বলেন, মেট্রোরেল প্রকল্পের ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-১ বাস্তবায়নের জন্য রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণখালী ও পিতলগঞ্জ মৌজার প্রায় ৯৬ একর জমি নির্ধারণ করে নকশা চূড়ান্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার শুরুতে জমিমালিকদের সঙ্গে অধিগ্রহণ মূল্য ও সীমানাসংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু সেসব সভায় জমির মূল্য নিয়ে কোনো প্রকার সমঝোতা হয়নি। জমিমালিকদের সঙ্গে সমঝোতা ছাড়াই জেলা প্রশাসন অধিগ্রহণের নোটিশ পাঠিয়েছে জমির মালিকদের কাছে। এর মাধ্যমে নামমাত্র মূল্যে জমি অধিগ্রহণ করে লোকজনকে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করা হচ্ছে।

কোনো জমির মালিকই নামমাত্র মূল্যে তাঁদের পূর্বপুরুষের রেখে যাওয়া ভিটেমাটি ছাড়তে রাজি নন। সমঝোতা ছাড়া জমি দখলের চেষ্টা করা হলে ভিটেমাটি রক্ষায় আন্দোলন গড়ে তুলবেন এলাকাবাসী।
শামসুল হক, বাসিন্দা, পিতলগঞ্জ, রূপগঞ্জ

পিতলগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আমিনুল হক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এর আগে এই এলাকায় পূর্বাচল নতুন শহর বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ জন্য তখন ব্রাহ্মণখালী এলাকার বহু মানুষকে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল। বর্তমানে তাঁরা পিতলগঞ্জে বসবাস করছেন। জমির ন্যায্যমূল্য না দিয়েই সেসব মানুষকে আবার উচ্ছেদ করা হচ্ছে।

আরেক বাসিন্দা শামসুল হক বলেন, কোনো জমির মালিকই নামমাত্র মূল্যে তাঁদের পূর্বপুরুষের রেখে যাওয়া ভিটেমাটি ছাড়তে রাজি নন। সমঝোতা ছাড়া জমি দখলের চেষ্টা করা হলে ভিটেমাটি রক্ষায় আন্দোলন গড়ে তুলবেন এলাকাবাসী।

সমঝোতা ছাড়া জমি অধিগ্রহণ হবে না বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা নূর-এ আলম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ের নোটিশ দিয়ে জমির মালিকদের ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত তথ্য জানানো হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, তাঁরা চাইলে লিখিত আপত্তি জানাতে পারেন। কয়েকজন ইতিমধ্যে আপত্তি জানিয়েছেনও। কোনো জমির মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলে আশ্বস্ত করেন এই কর্মকর্তা।