রেজিস্ট্রারকে কার্যালয় থেকে বের করে দিয়ে কর্মবিরতি

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
ছবি: সংগৃহীত

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক কর্মকর্তাকে বদলির জের ধরে প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে কর্মকর্তা পরিষদের (অফিসার অ্যাসোসিয়েশন) বিবাদের ঘটনায় ৫ সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) বিজন কুমার ব্রহ্ম এই কমিটি গঠন করেছেন।

এদিকে ঘটনার পর থেকেই ক্ষুব্ধ হয়ে আছে কর্মকর্তা পরিষদ। আজ রোববার সকালে তাঁরা রেজিস্ট্রারকে কার্যালয় থেকে বের করে দিয়ে দিনভর কর্মবিরতি পালন করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পর প্রকৌশল দপ্তর কর্মকর্তা পরিষদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে রেজিস্ট্রারের দপ্তরে চিঠি দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে ব্যবসায় অনুষদের ডিন মো. কামরুজ্জামানকে আহ্বায়ক ও রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম নিজেই সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। প্রকৌশল দপ্তরের কয়েকটি অভিযোগ ধরে কমিটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেবে।

অভিযোগ গুলো হচ্ছে—বিনা অনুমতিতে প্রকৌশল দপ্তরে প্রবেশ এবং প্রকৌশলীর সঙ্গে অশোভন ও অসৌজন্যমূলক আচরণ, দাপ্তরিক কাজে তাঁকে বাধা প্রদান, প্রকৌশল দপ্তরের জন্য বরাদ্দকৃত মাইক্রোবাসের চাবি কেড়ে নেওয়া, রেজিস্ট্রারের দপ্তরের জরুরি নথি জোর করে ছিনিয়ে নিয়ে পরে তা ফেরত দেওয়া এবং বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে কর্মকর্তা পরিষদের পিকনিকের নামে চাঁদা আদায়।

প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক স্টোর কর্মকর্তার বদলি নিয়ে প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে কর্মকর্তা পরিষদের বিরোধ দেখা দেয়। গত মঙ্গলবার এই বিরোধের জের ধরেই কর্মকর্তারা প্রধান প্রকৌশলীর পথ আগলে গাড়ির চাবি কেড়ে নেন। প্রতিবাদে পরদিন প্রকৌশল বিভাগ এক দিনের কর্মবিরতি পালন করেছে। অন্যদিকে কর্মকর্তা পরিষদ প্রধান প্রকৌশলীকে অব্যাহতি প্রদানসহ ৬ দফা দাবি তুলে আন্দোলনের হুমকি দেয়। প্রকৌশল বিভাগের দাবি, কর্মকর্তার বদলির মিথ্যা অভিযোগ তুলে কর্মকর্তা পরিষদ নেতারা প্রধান প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করেছেন। অন্যদিকে কর্মচারী পরিষদ বলছে, দায়িত্বরত প্রধান প্রকৌশলী অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে এক কর্মকর্তাকে বদলি করায় তাঁরা প্রতিবাদ করেছেন। কাউকে লাঞ্ছিত করার কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এ প্রসঙ্গে জানতে যোগাযোগ করা হলে রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) বিজন কুমার ব্রহ্ম তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতেই এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে ঘটনার পর থেকেই বিক্ষুব্ধ হয়ে আছেন কর্মকর্তা পরিষদের সদস্যরা। প্রধান প্রকৌশলীর অব্যাহতিসহ ৬ দফা দাবিতে তাঁরা রেজিস্ট্রার বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। স্মারকলিপিতে দাবি না মানলে রোববার থেকে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন জানান, পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী, রোববার সকালেই কর্মকর্তা পরিষদের সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে কর্মবিরতি শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা রেজিস্ট্রারের দপ্তর থেকে তাঁকে বের হয়ে যেতে বলেন। দুপুর ১২টার দিকে তিনি সহকর্মীদের নিয়ে কার্যালয় ছেড়ে অন্য কক্ষে গিয়ে অবস্থান নেন।

জানতে চাইলে কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি হারুনর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছয় দফা দাবিতে আমরা আগেই রেজিস্ট্রার বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। তিনি সে বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত কমিটির কাছে কর্মকর্তা পরিষদের নামে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে। এর প্রতিবাদেই আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মবিরতি পালন করেছি।’