রেড ক্রিসেন্টের ত্রাণের কথা বলে প্রতারণা

ভুক্তভোগী কাউন্সিলররা শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

  • প্রত্যেক ব্যক্তির নাম নিবন্ধন করতে ৭০০ টাকা করে লাগবে বলে জানিয়েছিল একটি চক্র।

  • পাঁচজন কাউন্সিলরের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র।

শরীয়তপুর জেলা

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি থেকে ত্রাণ দেওয়ার কথা বলে শরীয়তপুর পৌরসভার পাঁচজন কাউন্সিলরের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী কাউন্সিলররা শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

পালং মডেল থানা সূত্র জানায়, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ১ এপ্রিল এক ব্যক্তি শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র পারভেজ রহমানকে ফোন করেন। তিনি মেয়রকে জানান, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি থেকে ত্রাণ হিসেবে প্রত্যেক ব্যক্তিকে ৪ হাজার ২০০ টাকা, ৫০ কেজি চাল, ৫ কেজি তেল, ৫ কেজি ডাল ও ৫ কেজি চিনি দেওয়া হবে। ওই ত্রাণ দেওয়ার জন্য পৌরসভা থেকে ১৫০ জনের একটি তালিকা চাওয়া হয়। মেয়র তখন ওই ব্যক্তির মুঠোফোন নম্বর কাউন্সিলরদের দেন। কাউন্সিলররা ওই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি তখন কাউন্সিলরদের আরও বেশি ব্যক্তিকে ত্রাণ দেওয়া যাবে বলে জি এম আকবর রহমান নামের এক ব্যক্তির মুঠোফোন নম্বর দেন।

কাউন্সিলররা ওই ব্যক্তির মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, প্রত্যেক ব্যক্তির নাম নিবন্ধন করতে ৭০০ টাকা করে লাগবে। তখন ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোয়াজ্জেম ঢালি ১০০ নামের বিপরীতে ৭০ হাজার টাকা, ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমীর হোসেন ১৫০ নামের বিপরীতে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা, ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর পলাশ খান ৫০ নামের বিপরীতে ৩৫ হাজার টাকা, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ফেরদৌসি আক্তার ৬৫ হাজার ও মাহমুদা খানম ২৫ হাজার টাকা দেন। গত শনিবার তাঁরা বিকাশের মাধ্যমে ওই চক্রকে টাকা পাঠান। টাকা পাওয়ার পর মুঠোফোন ও বিকাশের নম্বরগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরে বিষয়টি নিয়ে পৌর কাউন্সিলরদের সন্দেহ হলে রোববার তাঁরা পালং মডেল থানায় জিডি করেন।

৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোয়াজ্জেম ঢালী বলেন, ‘মেয়র আমাদের নম্বরটি দিয়েছিলেন। এ কারণে আমাদের সন্দেহ হয়নি। বেশি মানুষকে ত্রাণসহায়তা দিতে পারব আশ্বাস পেয়ে তাদের প্রতারনার ফাঁদে পড়েছি।’

মেয়র পারভেজ রহমান বলেন, ‘রেড ক্রিসেন্টের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি ফোন করে ত্রাণ দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। নামের তালিকা চাওয়ায় ওই ব্যক্তির নম্বরটি কাউন্সিলরদের দিয়েছিলাম। কিন্তু ওই ব্যক্তি কাউন্সিলরদের কাছে টাকা চেয়েছেন, তা জানতাম না। বিষয়টি যখন জেনেছি, তার আগেই পাঁচজন কাউন্সিলর প্রতারক চক্রকে টাকা দিয়ে দিয়েছেন।’ পালং মডেল থানার ওসি আসলাম উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করা হচ্ছে। মুঠোফোন ও বিকাশ নম্বরগুলো রয়েছে। তাদের খুঁজে পাওয়া সহজ হবে।