রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়: উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে আসার দাবি, সহ–উপাচার্য অবরুদ্ধ

উপাচার্যের উপস্থিতির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে সহ-উপাচার্য সরিফা সালোয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভাকক্ষে
ছবি: প্রথম আলো

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য সরিফা সালোয়াকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে ‘অধিকার সুরক্ষা পরিষদ’ নামে শিক্ষকদের একটি সংগঠন। এ সংগঠনের শিক্ষকেরা উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর ক্যাম্পাসে অবস্থান করার দাবিতে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে সিন্ডিকেট সভাকক্ষে সহ-উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করা হয়। সবশেষে বিকেল চারটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সহ-উপাচার্য অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন।

অধিকার সুরক্ষা পরিষদের দাবি, উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে উপস্থিত থাকা এবং সব অনিয়ম বন্ধের দাবিতে অধিকার সুরক্ষা পরিষদের শিক্ষকেরা দুপুর ১২টায় সহ–উপাচার্য সরিফা সালোয়ার সঙ্গে দেখা করতে যান। শিক্ষকদের সঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও ছিলেন। এ সময় সরিফা সালোয়া সিন্ডিকেটের সভাকক্ষে ছিলেন। শিক্ষকেরা সেখানে গিয়ে অধিকার সুরক্ষা পরিষদের পক্ষ থেকে সহ-উপাচার্যকে একটি স্মারকলিপি দেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতিপ্রদত্ত নিয়োগের শর্তে বলা হয়েছে, উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে সার্বক্ষণিক উপস্থিত থাকতে হবে। কিন্ত উপাচার্য মাসের পর মাস অনুপস্থিত থাকছেন। অধিকার সুরক্ষা পরিষদের পক্ষে দাবি করা হয়েছে, উপাচার্যকে আজই (বৃহস্পতিবার) ক্যাম্পাসে উপস্থিত হতে হবে। সব সভা ক্যাম্পাসেই করতে হবে। সব অপকর্ম বন্ধ করতে হবে।

এরপর আলোচনার একপর্যায়ে শিক্ষকেরা সহ-উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে ফেলেন। তাঁরা সিন্ডিকেট সভাকক্ষ থেকে সহ-উপাচার্যকে আর বের হতে দেননি।

উপাচার্যের উপস্থিতির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে সহ-উপাচার্য সরিফা সালোয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভাকক্ষে
ছবি: প্রথম আলো

অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক মতিউর রহমান বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাঁরা উপাচার্যের অবৈধ কাজের সহযোগী, তাঁরাও অপরাধের দায় এড়াতে পারেন না। তাই তাঁদেরও এসব কাজ থেকে সরে আসতে হবে।

কর্মসূচি চলাকালে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি গাজী মাজহারুল আনোয়ার বলেন, ঢাকায় লিঁয়াজো অফিসে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ থেকে ছয়জন ব্যক্তির যাওয়া-আসা বন্ধ করলেই অনেক অপকর্ম বন্ধ হবে। তাই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ সব সিন্ডিকেট সদস্যকে তিনি ঢাকার সভায় উপস্থিত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।

বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি তুহিন ওয়াদুদ বলেন, উপাচার্যকে আজই (বৃহস্পতিবার) ক্যাম্পাসে আসতে হবে। রাষ্ট্রপতি ও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য কর্তৃক প্রদত্ত শর্ত পালনের প্রয়োজনে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজের স্বার্থে তাঁর ক্যাম্পাসে আসার কোনো বিকল্প নেই।

কর্মসূচি চলাকালে গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের আহ্বায়ক মশিউর রহমান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহামুদুল হক প্রমুখ শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

অধিকার সুরক্ষা পরিষদের নেতাদের দাবি শোনার পর সহ–উপাচার্য সরিফা সালোয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘উপাচার্য স্যারের সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বলব।’