রোগীর মৃত্যুর জের, পূর্বধলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হামলা–ভাঙচুর

নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর স্বজনেরা জরুরি বিভাগে ভাঙচুর চালায়
ছবি: প্রথম আলো

এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছেন ওই রোগীর স্বজনেরা। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটায়। ওই রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, জরুরি বিভাগে চিকিৎসক না থাকায় ওই রোগী মারা গেছেন।

তবে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই রোগী মারা গেছেন। আর জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

মারা যাওয়া রোগীর নাম শাহিদ মিয়া (৩৮)। তিনি উপজেলার জারিয়া ইউনিয়নের দেওটুকোন গ্রামের আবদুল মজিদের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দা, পুলিশ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, শাহিদ মিয়া বেশ কিছুদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন। আজ শুক্রবার সকালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনেরা তাঁকে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এ সময় জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা শৌচাগারে ছিলেন। তবে সেখানে উপসহকারী কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা আবদুল মালেক উপস্থিত ছিলেন। রোগীর স্বজনেরা তাঁকে চিকিৎসককে ডেকে দেওয়ার অনুরোধ জানান।

কিছুক্ষণ পর শৌচাগার থেকে বের হয়ে চিকিৎসক রোগী শাহিদ মিয়াকে পরীক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় রোগীর সঙ্গে আসা লোকজন ও স্বজনেরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তাঁরা চিকিৎসকের অবহেলার অভিযোগ তুলে জরুরি বিভাগে হামলা চালিয়ে চেয়ার, টেবিলসহ কিছু চিকিৎসা সরঞ্জাম ভাঙচুর করেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে।

মৃত শাহিদ মিয়ার ভাই সুমন মিয়া বলেন, জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ওই সময় উপস্থিত থাকলে তাঁর ভাই বিনা চিকিৎসায় মারা যেতেন না। তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতালে ডাক্তারের অবহেলার কারণে আমার ভাই মারা গেছে। ডাক্তারের জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছিল। এ সময় রাগের মাথায় লোকজন কিছু জিনিসপত্র ভাঙচুর করেছে।’

তবে ওই সময় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসা কর্মকর্তা শুকলা মৌমিতা বলেন, ‘হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।’

পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুহাম্মদ শাহিন বলেন, ‘কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়াশরুমে থাকায় আসতে কিছুটা দেরি হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে রোগীর স্বজনেরা হাসপাতালে ভাঙচুর করেছে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।’
পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। এ নিয়ে হাসপাতালের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’