রোদ পোহাতে গিয়ে দেখেন ফাটল, লাল চাদর দেখিয়ে থামালেন ট্রেন

রেললাইনের এই ফাটলটি দেখে এলাকাবাসী সংকেত দিলে চলন্ত ট্রেনটি থেমে যায়। পরে রেলওয়ে প্রকৌশল বিভাগের লোকজন এসে মেরামত করলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। আজ বৃহষ্পতিবার সকালে ময়মনসিংহ মহানগরীর কেওয়াটখালি এলাকায়প্রথম আলো

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা। শীতের সকালে বাসা থেকে বের হয়ে রোদ পোহাতে রেললাইনের পাশে এসে দাঁড়ান কয়েকজন নারী। এ সময় তাঁরা খেয়াল করেন রেললাইনে ফাটল। তাড়াতাড়ি তাঁদেরই এক প্রতিবেশী অবসরপ্রাপ্ত রেলওয়ে কর্মচারী হাতেম আলীকে ফাটলের কথা জানান। সেই কর্মচারী দ্রুত ময়মনসিংহ স্টেশনে বিষয়টি অবহিত করেন।

রেললাইনে ফাটল দেখে এলাকাবাসী সংকেত দিলে চলন্ত ট্রেনটি থেমে যায়। পরে রেলওয়ে প্রকৌশল বিভাগের লোকজন এসে মেরামত করলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। আজ বৃহষ্পতিবার সকালে ময়মনসিংহ মহানগরীর কেওয়াটখালি এলাকায়
প্রথম আলো

ততক্ষণে ঢাকার পথে ময়মনসিংহ স্টেশন ছেড়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনটি। পরে অন্য কোনো উপায় না দেখে ওই নারীরা তাঁদের লাল চাদর উঁচিয়ে ধরে ট্রেনচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং সতর্কসংকেত দেখে চালক ট্রেন থামিয়ে দেন। এভাবেই একটি দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যান ট্রেনের যাত্রীরা। ঘটনাটি কেওয়াটখালী এলাকার।

এরপর খবর পেয়ে রেলওয়ের প্রকৌশলী ও অন্যান্য কর্তাব্যক্তি দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং ফাটল দেখে তা মেরামতের সিদ্ধান্ত নেন। এক পাশের লাইনে দুটি লোহার পাতের জোড়ার মধ্যবর্তী স্থানে ফিসপ্লেটে মাঝারি রকমের ফাটল ছিল। পরে সেই ত্রুটি সারিয়ে দেড় ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে ফাটলের সুনির্দিষ্ট কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।

আমিসহ কয়েকজন নারী সকালে রোদ পোহানোর উদ্দেশ্যে জড়ো হয়েছিলাম। এ সময় ময়মনসিংহ-ঢাকা রেললাইনের একটি অংশে ফাটল দেখতে পাই। পরে আমরা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে চলন্ত ট্রেনটিকে থামার সংকেত দিই।
হাজেরা বেগম

ওই নারীদের একজন হাজেরা বেগম বলেন, তিনিসহ কয়েকজন নারী সকালে রোদ পোহানোর উদ্দেশ্যে জড়ো হয়েছিলেন। এ সময় তাঁরা ময়মনসিংহ-ঢাকা রেললাইনের একটি অংশে ফাটল দেখতে পান। পরে তাঁরা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে চলন্ত ট্রেনটিকে থামার সংকেত দেন।

বিলকিছ আক্তার নামের আরেক নারী বলেন, তাঁদের সঙ্গে এলাকার অন্যরা মিলে একটি দুর্ঘটনা প্রতিরোধের চেষ্টা করেছেন। নয়তো ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা ছিল।

রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী কবির হোসেন বলেন, তাঁরা ফাটলের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসেন এবং অস্থায়ীভাবে ফিসপ্লেটের মাঝের ফাটল লোহার পাতটি বদলে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক করেন। প্রাথমিকভাবে মেরামতকৃত রেললাইনের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচলের নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। অচিরেই সম্পূর্ণ লোহার পাতটি পরিবর্তন করার পর স্বাভাবিক গতিতে ট্রেন চলতে পারবে।

ময়মনসিংহ স্টেশন সুপার জহুরুল ইসলাম বলেন, ময়মনসিংহ-ঢাকা রেলপথে ফাটল থাকায় দেড় ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। এ সময় তিস্তা এক্সপ্রেস, বলাকা কমিউটার, দেওয়ানগঞ্জ কমিউটারসহ বেশ কয়েকটি ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়ানো ছিল। পরে রেললাইন মেরামত করা হলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।