রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আন্তরিকতার অভাব মিয়ানমারের: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মেজর (অব.) মোহাম্মদ এমদাদুল ইসলাম রচিত দুটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনসহ অতিথিরা। আজ দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে।
প্রথম আলো

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে মিয়ানমারের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। এরপরও মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে বলে আশাবাদী তিনি। তবে কখন ফিরিয়ে নেবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন মন্ত্রী।
রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে দুটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর (অব.) মোহাম্মদ এমদাদুল ইসলাম রচিত প্রথমা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত রোহিঙ্গা নিঃসঙ্গ নিপীড়িত জাতিগোষ্ঠী ও খড়িমাটি থেকে প্রকাশিত শেষ সীমান্তের পর কোথায় যাব আমরা শীর্ষক দুটি বইয়ের প্রকাশনা উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান খড়িমাটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, তার সব পদক্ষেপ বাংলাদেশ সরকার গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত আছে। তাদের বলা হয়েছে, তাদের দেশে উন্নয়ন হচ্ছে। এ দেশেও উন্নয়ন হচ্ছে। যদি এই লোকগুলোকে নিয়ে যাওয়া না হয়, তাহলে এই দুই দেশ তথা এই অঞ্চলে অশান্তি সৃষ্টি হবে। তা কোনো দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়।

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে চীন, ভারত, থাইল্যান্ডসহ সবার সঙ্গে আলোচনা চলছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সবাই স্বীকার করেছে এই সমস্যা মিয়ানমারের সৃষ্ট। সমাধানের বিষয়টি নির্ভর করছে মিয়ানমারের ওপর। আর এর সমাধান হচ্ছে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়া। কিন্তু রোহিঙ্গারা মিয়ানমারকে বিশ্বাস করছে না।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। তারা বারবার বলেছে, রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাবে। কখনো বলেনি নেবে না। আমরা বলেছি নিয়ে যাও, তবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তারাও উপযুক্ত ও উন্মুক্ত পরিবেশ তৈরির অঙ্গীকার করেছে।’
বারবার বলার পরও গত সাড়ে তিন বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফিরিয়ে নিয়ে যায়নি বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটি দুঃখজনক। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে মিয়ানমারের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। গত বছরের জানুয়ারিতে আলোচনা শুরু হলেও পরে কোভিড ও সে দেশের নির্বাচনের বাহানায় ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি থমকে ছিল। তবে এখন আবার আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে।

মেজর (অব.) মোহাম্মদ এমদাদুল ইসলাম বলেন, তাঁর বইয়ে রোহিঙ্গার পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস এবং বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুপ্রেরণা না থাকলে লেখালেখি হয়তো করা হতো না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন এ বি এম আবু নোমান, সুপ্রভাত বাংলাদেশের সম্পাদক রুশো মাহমুদ ও দক্ষিণ কোরিয়ার অনারারি কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ মহসীন।