লকডাউন শিথিলের আগেই বরিশালে লঞ্চঘাটে ঢাকাগামী যাত্রীদের ভিড়
কঠোর লকডাউন শেষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চসহ সব ধরনের গণপরিবহন চালুর সিদ্ধান্তের পর আজ বুধবার থেকেই বরিশালের বাসস্ট্যান্ড ও লঞ্চঘাটে ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে। এদিকে লঞ্চ চলাচল শুরু হওয়ার ঘোষণা আসার পর ঢাকার যাত্রীদের আনার জন্য আজ গভীর রাতে একটি লঞ্চ নৌবন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। এই খবরে বরিশাল নৌবন্দরে কয়েক শ যাত্রী অবস্থান নিয়েছেন। তাঁরা এই লঞ্চযোগে ঢাকায় যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন।
নৌবন্দরের একটি সূত্র জানায়, গভীর রাতে যখন লঞ্চটি ছেড়ে যাবে, তখন ঘাটে বন্দর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো নজরদারি থাকবে না। এই সুযোগে এসব যাত্রীদের নিয়ে বন্দর ত্যাগ করবে লঞ্চটি। এ কারণে আগেভাগেই কিছু দালাল নিয়োগ করে যাত্রীদের বন্দরে আনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
অ্যাডভেঞ্চার-৯ নামে ওই লঞ্চের কর্মচারীরা জানান, লঞ্চটি আজ রাত ১২টায় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। এরপর এই লঞ্চটি আগামীকাল ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে আবার বরিশাল আসবে। আজ রাত সাড়ে ৮টার দিকে বরিশাল নৌবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, ব্যাগ ও অন্যান্য মালামাল নিয়ে কয়েক শ যাত্রী ঢাকায় যাওয়ার জন্য বন্দরে অবস্থান নিয়েছেন। এ সময় আগেই বেশ কিছু যাত্রী লঞ্চে ওঠার জন্য উদ্যত হলে কর্মচারীরা বাধা দেন। তবে এ সময় লঞ্চটির প্রধান ফটক বন্ধ থাকতে দেখা যায়।
কয়েকজন যাত্রী জানান, তাঁদের বলা হয়েছে এই লঞ্চে ঢাকার যাত্রী নিয়ে যাওয়া হবে। এ কারণেই তাঁরা নৌবন্দরে হাজির হয়েছেন। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে লঞ্চের অন্তত তিনজন কর্মচারী বলেন, আমরা কাউকে খবর দিয়ে আনিনি। লঞ্চটি ঢাকার উদ্দেশে রাত ১২টার দিকে ছেড়ে যাবে। যাওয়ার সময় কোনো যাত্রী নেওয়া হবে না।
বরিশাল নৌবন্দর কর্মকর্তা ও বিআইডব্লিউটির যুগ্ম পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘অ্যাডভেঞ্চার নামে ওই লঞ্চটির আগামীকালের শিডিউল ঢাকা থেকে। তাই লঞ্চটি রাত ১২টার পর ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা। এখন যাত্রী নিয়ে যাবে কি না, সেটা বলতে পারবে না। বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।’
এদিকে বুধবার সকাল থেকে সারা দিনই বরিশাল নগরের নথুল্লাবাদ বিআরটিসি বাসসংলগ্ন সড়কে ঢাকামুখী মানুষের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। সেখান থেকে মোটরসাইকেলের পাশাপাশি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে যাত্রীদের মাওয়ার উদ্দেশে রওনা দিতে দেখা গেছে। এ সময় অনেক যাত্রীকে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে ঢাকামুখী পিকআপ, ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের চালকদের সঙ্গে দরদাম করতে দেখা গেছে।
আলী হোসেন নামে একজন যাত্রী আজ বিকেলে জানান, কঠোর বিধিনিষেধের শুরুতে তিনি গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। কিন্তু এখন জরুরি প্রয়োজনে আবার ঢাকায় যেতে হচ্ছে। তাই বাসা থেকে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে এসেছেন। এখান থেকে মাওয়ার উদ্দেশে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন। একজন পিকআপ ভ্যানের চালক তাঁর কাছে ১ হাজার ২০০ টাকা ভাড়া চেয়েছেন।