লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে গাড়িচাপায় চিতা বিড়ালের মৃত্যু

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যাগে গাড়ির চাপায় মারা যাওয়া চিতা বিড়াল
ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে গাড়িচাপায় একটি বিরল প্রজাটির চিতা বিড়ালের মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার ভোরে উদ্যানের জানকি ছড়া এলাকায় দ্রুতগামী কোনো একটি গাড়ি প্রাণীটিকে চাপা দেয়। বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ মৃত অবস্থায় চিতা বিড়ালটিকে উদ্ধার করেছে।

বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী চিতা বিড়াল সংরক্ষিত প্রজাতির একটি প্রাণী।

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে চলে গেছে ব্যস্ততম ঢাকা-সিলেট রেলপথ এবং শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ সড়ক। সড়কের দুই পাশেই গভীর বন। বনের প্রাণীরা দিনরাত সড়কের এপাশ থেকে ওপাশে আসা–যাওয়া করে। রাতের বেলায় তাদের বিচরণ বেড়ে যায়। রেলপথ ও সড়কপথ পারাপারের সময় ট্রেন ও দ্রুতগামী যানবাহনের আঘাতে প্রায়ই বন্য প্রাণী মারা পড়ছে।

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের লাউয়াছড়া বন রেঞ্জ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার ভোরের কোনো এক সময়ে রাস্তা পারাপারের সময় দ্রুতগামী একটি গাড়ির চাপায় বিরল প্রজাতির চিতা বিড়ালটির মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের লোকজন চিতা বিড়ালটি উদ্ধার করেছেন।

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ মৌলভীবাজারের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মারা যাওয়া প্রাণীটি বিরল প্রজাটির চিতা বিড়াল। কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়কের উন্নয়ন হওয়ার পর এ পথে দ্রুতগতিতে গাড়ি চলাচল করছে বলে মাঝেমধ্যে গাড়িচাপায় বন্য প্রাণী মারা যাচ্ছে।

এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় একটি বিরল প্রজাতির চশমা পরা হনুমান মাথায় যানবাহনের আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই মারা গেছে। এর প্রায় ১৫ দিনের মাথায় ৭ ফেব্রুয়ারি আরেকটি চশমা পরা হনুমান গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যায়। গত বছরের ২৮ অক্টোবর রাতে গাড়িচাপায় বিপন্ন প্রজাতির একটি শজারু মারা যায়। এ ঘটনার ১২ দিনের মধ্যে গাড়িচাপায় মারা গেছে একটি গন্ধগোকুল। এর দেড় মাসের ব্যবধানে গাড়ির ধাক্কায় একটি বানরের মৃত্যু হয়।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, প্রতি মাসেই এই সড়কে পাঁচ থেকে ছয়টি বন্য প্রাণী মারা পড়ে। এর মধ্যে অনেকগুলো কেউ জানতেও পারে না। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হিসাবে, উদ্যানের ভেতর দিয়ে যাওয়া সড়ক ও রেলপথে বছরে ৪০-৫০টি প্রাণী মারা যায়।