লাকসামে বিনা ভোটে জয়ের পথে মেয়র ও ৯ কাউন্সিলর

পৌরসভা নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভা নির্বাচনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থীর সমর্থনকারীকে আসতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সঠিক সময়ে তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে হাজির হতে না পারায় বিএনপি প্রার্থী বেলাল হোসেন মজুমদারের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। ফলে বিনা ভোটে মেয়র হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের।

আজ রোববার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে এম সাইফুল আলম এই ঘোষণা দেন। পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ৯ জন বিনা ভোটে কাউন্সিলর হতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। আগামী ৩০ জানুয়ারি ওই নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিনক্ষণ নির্ধারিত রয়েছে।

‘আমার সমর্থনকারীকে মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয় অন্যায়ভাবে।’
বেলাল হোসেন মজুমদার, বিএনপির মেয়র প্রার্থী

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১ নম্বর ওয়ার্ডে মোহাম্মদ উল্লাহ, ২ নম্বর ওয়ার্ডে খলিলুর রহমান, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মাসুদ হাসান, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে আবদুল আজিজ, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে দেলোয়ার হোসেন ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে গোলাম রাব্বানীর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। সংরক্ষিত কাউন্সিলর (মহিলা) পদে ১ নম্বর ওয়ার্ডে নাসিমা আক্তার, ২ নম্বর ওয়ার্ডে নাসিমা সুলতানা ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মুশফেকা আলমেরও প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। বিনা ভোটে জয়ী হতে যাওয়া কাউন্সিলর প্রার্থীরা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের রাজনীতিতে জড়িত। আর দ্বিতীয় দফায় মেয়র হতে যাওয়া আবুল খায়ের লাকসাম উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক।

বিএনপির স্থানীয় নেতা–কর্মীদের অভিযোগ, রোববার বেলা ১১টায় লাকসাম উপজেলা কমপ্লেক্স মিলনায়তনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ছিল। এদিন বিএনপির মেয়র প্রার্থী বেলাল হোসেন মজুমদারের সমর্থনকারী পৌর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমানকে উপজেলা ফটকের সামনে মারধর ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা।

ফলে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় বেলাল হোসেন তাঁর সমর্থনকারীকে রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে হাজির করতে পারেননি। এ অবস্থায় রিটার্নিং কর্মকর্তা স্থানীয় সরকার (পৌরসভা নির্বাচন) বিধিমালা অনুযায়ী বিএনপির প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন।

বিএনপির মেয়র প্রার্থী বেলাল হোসেন মজুমদার বলেন, ‘আমার সমর্থনকারীকে মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয় অন্যায়ভাবে।’

১০ জানুয়ারি পৌর নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। ওই দিন প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে তিনটি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ভোট হবে।

জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা এ কে এম সাইফুল আলম বলেন, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. আবুল খায়ের অভিযোগ করেন, বিএনপি প্রার্থীর সমর্থনকারী মাহবুবুর রহমানের স্বাক্ষর সঠিক নয় এবং বিএনপির প্রার্থীকে তিনি সমর্থন করেননি। তিনি বাছাইয়ের সময় উপস্থিত হননি। এ অবস্থায় রিটানিং কর্মকর্তা হিসেবে বিধিমালার ১৪ (২) অনুযায়ী বেলাল হোসেনের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা স্বীকার করেন, বিএনপির প্রার্থী বাছাইয়ের সময় অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর সমর্থনকারীকে বাইরে মারধর করা হয়েছে। তিনি ভয়ে পালিয়ে গেছেন।

বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. আবুল খায়ের বলেন, বিধিমালা অনুযায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তা বিএনপির প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করেছেন। তাঁরা কাউকে মারধর করেননি। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে লাকসামে নির্বাচন করছে।

১০ জানুয়ারি পৌর নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। ওই দিন প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে তিনটি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ভোট হবে। বর্তমানে ৫ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ছয়জন ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন প্রার্থী রয়েছেন।