লাগেজে তরুণীর লাশ, চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রে জট খুলল মৃত্যুর রহস্যের

সড়কের পাশে পড়ে থাকা লাগেজ থেকে ‘অজ্ঞাতনামা’ এক তরুণীর (২০) লাশ উদ্ধার হয়েছিল। রহস্যের জট খুলতে নানা তৎপরতা শুরু করে পুলিশ। ওই তরুণীর পরিচয় শনাক্তের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে তাঁর ছবি প্রকাশ করা হয়। বিভিন্ন এলাকা ও যানবাহনে পোস্টার সাঁটানোও হয়। তবে শেষ পর্যন্ত সেই লাগেজে পাওয়া একটি সূত্র ধরে রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

ঘটনাটি ময়মনসিংহের গৌরীপুরের। গত বছরের ৯ নভেম্বর গৌরীপুর উপজেলার গঙ্গাশ্রম এলাকার জোড়া ব্রিজের নিচ থেকে লাগেজবন্দী অবস্থায় সাবিনা নামের ওই তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। তিনি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার উজান ঘাগরা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে। সাবিনা ময়মনসিংহ নগরের একটি বহুতল ভবনের বাসিন্দা প্রকৌশলী আবুল খায়েরের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতেন।

শুক্রবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, গৃহর্কতা ও তাঁর স্ত্রী গৃহপরিচারিকা সাবিনাকে নির্যাতন করতেন। দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতনের ফলে সাবিনা শুকিয়ে ক্ষীণ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এরপর গত ৯ নভেম্বর সাবিনার মরদেহ লাগেজে ভরে ব্যক্তিগত গাড়িতে গৌরীপুর উপজেলার গঙ্গাশ্রম এলাকার জোড়া ব্রিজের নিচে পানিতে ফেলে তারা পালিয়ে যান। এ ঘটনায় গৌরীপুর থানায় ১১ নভেম্বর অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়।

পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, মৃত ওই তরুণীর পরিচয় শনাক্তের জন্য তাঁর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদপত্রে প্রচার চালানো হয়। ময়মনসিংহসহ আশপাশের জেলায় লাশের ছবি দিয়ে পোস্টার সাঁটানোও হয়। এ ছাড়া ময়মনসিংহ থেকে চলাচলকারী বাসের পেছনেও পোস্টার সাঁটানো হয়। পাশাপাশি জব্দ করা আলামত বারবার পরীক্ষা করা হয়। একপর্যায়ে লাগেজে একটি প্রেসক্রিপশন (চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র) পাওয়া যায়। তারই সূত্র ধরে এগোতে থাকে মামলার তদন্ত কার্যক্রম।

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, তদন্তের পর বুধবার রাতে সদর উপজেলার বাড়েরা থেকে আবুল খায়ের ও তাঁর স্ত্রী রিফাত জেসমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে তাঁরা হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।