লাঠিখেলার সেই আয়োজন এখন গুরুদাসপুরের ঐতিহ্যের মেলা

মেলায় আসা শিশুদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল বিভিন্ন ইভেন্ট। আজ মঙ্গলবার গুরুদাসপুরের চাপিলা ইউনিয়নের মোকিমপুর মেলায়
ছবি: সংগৃহীত

৫৩ বছর আগে পারিবারিক লাঠিখেলার আয়োজন ঘিরে যে মেলা বসেছিল, তা এখন ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। নাটোরের গুরুদাসপুরের চাপিলা ইউনিয়নে মোকিমপুর মেলায় এখনো লাঠিখেলার আয়োজন করা হয়। সঙ্গে থাকে ঘোড়দৌড় ও বউ মেলা।

আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে চাপিলা ইউনিয়নের মোকিমপুর মাঠে বসেছে এই মেলা। চলবে কাল বুধবার পর্যন্ত। প্রথম দিনে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে বসা মেলায় আসেন আশপাশের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। মেলায় আছে নাগরদোলা, শিশুদের খেলনা, প্রসাধনী, আসবাব, ঝুড়ি-মুড়কিসহ নানা পদের মিষ্টান্ন।

মেলার আয়োজক ‘মুন্নাফ স্মৃতি সংঘ’। আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চৈত্র মাসের প্রথম দিন এ মেলা শুরু হয়। মেলাকে ঘিরে এলাকার বাড়ি বাড়ি মেয়েসহ জামাইকে দাওয়াত করে আনা হয়। মেলা প্রাঙ্গণে ১০টি দলে ভাগ হয়ে ৩০টি ঘোড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।

মেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি আবদুস সাত্তার ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, ঘোড়দৌড়ে অংশগ্রহণকারীদের জন্য প্রথম পুরস্কার হিসেবে একটি টেলিভিশন, দ্বিতীয় পুরস্কার দেওয়া হয় মুঠোফোন। অন্যদের দেওয়া হয় সৌজন্য পুরস্কার।

ঐতিহ্যবাহী এ গ্রামীণ মেলা প্রসঙ্গে চাপিলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বলেন, এলাকার সব শ্রেণি–পেশার মানুষ সম্মিলিতভাবে মেলাটি আয়োজনে সহযোগিতা করেন। মেলার নিরাপত্তার বিষয়টি গ্রামের মানুষেরাই নিয়ন্ত্রণ করেন।

মেলা আয়োজনের ইতিহাস জানা যায় আয়নাল হকের কাছে থেকে। তিনি এই মেলা আয়োজনের প্রথম উদ্যোক্তা মুন্নাফ আলী মণ্ডলের ছেলে। পরে মুন্নাফ স্মৃতি সংঘের ব্যানারে এ মেলার আয়োজন হয়ে আসছে।

আয়নাল হক বলেন, উপজেলার চলনবিলের মাঝের গ্রাম মোকিমপুর ও রওশনপুর। বর্ষায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দীর্ঘদিন এই দুই গ্রামের বাসিন্দা ঘরবন্দী থাকতেন। এমন প্রেক্ষাপটে ৫৩ বছর আগে মোকিমপুর গ্রামে তাঁর বাবা মুন্নাফ আলী মণ্ডল ও চাচা এনায়েত মণ্ডল পারিবারিকভাবে লাঠিখেলার আয়োজন করতেন। গ্রামের শত শত মানুষ এ খেলা উপভোগ করতেন। ধীরে ধীরে এ আয়োজন মেলায় রূপ নেয়।