লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনে সাফারি পার্ক স্থাপনের পক্ষে মানববন্ধন

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনে সাফারি পার্ক স্থাপনের পক্ষে মানববন্ধন হয়েছে। গতকাল বুধবার উপজেলা সদরে অবস্থিত কামিনীগঞ্জ ও ভবানীগঞ্জ বাজারে এ কর্মসূচি পালিত হয়
ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনে সাফারি পার্ক স্থাপনের পক্ষে ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। গতকাল বুধবার উপজেলা সদরে অবস্থিত কামিনীগঞ্জ ও ভবানীগঞ্জ বাজারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। ‘সর্বস্তরের জনগণের’ ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে উপজেলা আওয়ামী লীগসহ এর অঙ্গ ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন অংশ নেয়।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, গতকাল বেলা ১১টায় দুটি স্থানে একযোগে মানববন্ধন হয়। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. বদরুল হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মোঈদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদ, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের সদস্য মো. বদরুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রিংকু রঞ্জন দাশ, পূর্ব জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সালেহ উদ্দিন আহমদ, গোয়ালবাড়ী ইউপির চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন আহমদ, পশ্চিম জুড়ী ইউপির চেয়ারম্যান শ্রীকান্ত দাস, জায়ফরনগর ইউপির চেয়ারম্যান মাছুম রেজা প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, লাঠিটিলা বনকে দখলমুক্ত করাসহ সেখানকার বন্য প্রাণী রক্ষায় স্থানীয় সাংসদ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে দেশের তৃতীয় সাফারি পার্ক স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সাফারি পার্ক হলে সারা দেশে জুড়ী পরিচিত হয়ে উঠবে। এ অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। জুড়ীর চেহারা পাল্টে যাবে।

বক্তারা বলেন, বন ও বন্য প্রাণীর সুরক্ষায় বন বিভাগ আছে। পরিবেশকর্মীরা দেশের আগের দুটি সাফারি পার্ক (ডুলাহাজরা ও গাজীপুর) স্থাপনে বন ও বন্য প্রাণীর কী ক্ষতি হয়েছে, সেটা উপস্থাপন করতে পারতেন। সেটা না করে তাঁরা বড় একটি প্রকল্পের বিরোধিতায় নেমেছেন, অপপ্রচার চালাচ্ছেন। বক্তারা এ অপপ্রচার থেকে সরে আসার জন্য তাঁদের প্রতি আহ্বান জানান। সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমকর্মীদেরও উন্নয়নবিরোধী প্রতিবেদন থেকে বিরত থেকে পার্ক স্থাপনে সহযোগিতার আহ্বান জানান তাঁরা।

বক্তারা আরও বলেন, ৫ হাজার ৬৩১ একর আয়তনের ক্রান্তীয় এই চিরসবুজ বনে সাফারি পার্ক স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে বন বিভাগ। এ কাজে প্রায় ৯৮০ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নিয়ে সম্প্রতি প্রথম আলোসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি সুলতানা কামালের নেতৃত্বে বাপার একটি দল গত ২৪ আগস্ট সরেজমিন লাঠিটিলা বন পরিদর্শনে যায়। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে সুলতানা কামাল বলেন, সংরক্ষিত বনে সাফারি পার্ক হলে বনের পরিবেশ বদলে যাবে। মানুষকে পুনর্বাসন করা সম্ভব। কিন্তু বনের পরিবেশ, জীবজন্তুকে পুনর্বাসন করা সম্ভব নয়। সাফারি পার্ক করতে হলে বিকল্প জায়গায় করা যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, সাফারি পার্ক হোক, ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ুক, বিনোদনের জায়গা বাড়ুক। কিন্তু সংরক্ষিত বনে তাঁরা সাফারি পার্ক চান না।