লুটের টাকাসহ চার ‘ডাকাত’ গ্রেপ্তার

গাজীপুর জেলার ম্যাপ

গাজীপুরে চীনা কারখানায় ডাকাতির তিন দিন পর চার সন্দেহভাজন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সঙ্গে লুট করা দেড় কোটি টাকার মধ্যে ৭৪ লাখ ৯৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর থানার সারাবো এলাকায় চীনা মালিকানাধীন একটি ব্যাটারি কারখানায় ৬ সেপ্টেম্বর দিবাগত মধ্যরাতে ওই ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ থানার তারাটিয়াএলাকার বাসিন্দা মো. সাইফুল ইসলাম (৩৮), তাঁর স্ত্রী সেলিনা বেগম (৩০), একই জেলার ইব্রাহিম খলিল (২৫) ও চাঁদপুরের মতলব থানার লতরদী এলাকার বাসিন্দা এমদাদুল্লাহ ওরফে এমদাদ (২০)। তাঁদের মধ্যে এমদাদ কারখানার নিরাপত্তাকর্মী।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার মো. আজাদ মিয়া এ তথ্য জানিয়েছেন। এ সময় উপকমিশনার কে এম আরিফুল হক, মোহাম্মদ শরীফুর রহমান, নূর-ই আলম, উপকমিশনার (মিডিয়া) জাকির হাসান, সহকারী পুলিশ কমিশনার থোয়াই অং প্রু মারমা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গ্রেপ্তার সেলিনা বেগম গতকাল বুধবার গাজীপুর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁর কাছ থেকে লুট করা ৪৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত অন্য পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার ও লুণ্ঠিত বাকি টাকা উদ্ধারে অভিযান চলছে।

ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার মো. আজাদ মিয়া জানান, ৬ সেপ্টেম্বর দিবাগত মধ্যরাতে কাশিমপুরের সারাবো এলাকায় চীনা মালিকানাধীন চং থিয়েনরি জেনারেশন রিফোর্স কোম্পানি লিমিটেড নামের একটি ব্যাটারি তৈরির কারখানায় ডাকাতি হয়। ছয়-সাত সদস্যের ডাকাত দল কারখানার মালিক অংয়ের মাথায় রড দিয়ে  আঘাত করে তাঁর কক্ষে থাকা প্রায় দেড় কোটি টাকা এবং তাঁর একটি মুঠোফোন লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় কারখানার তরফ থেকে পরদিন ৭ সেপ্টেম্বর কাশিমপুর থানায় অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলা হয়।

মামলার পরপরই জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ) মোহাম্মদ শরিফুর রহমানের তত্ত্বাবধানে এবং কোনাবাড়ী জোনের সহকারী কমিশনার থোয়াই অং প্রু মারমার নেতৃত্বে মহানগর পুলিশের একাধিক টিম কুমিল্লা, জামালপুর, গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ৭ সেপ্টেম্বর প্রথমে কারখানার নিরাপত্তাকর্মী এমদাদকে আটক করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জামালপুরে অভিযান চালিয়ে সাইফুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা বেগমকে আটক করা হয় এবং তাঁর কাছ থেকে লুট করা ৪৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে সেলিনার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জামালপুরের সাইফুল ইসলাম এবং একই জেলার ইব্রাহিম খলিলকে আটক করা হয়। পরে তাঁদের হেফাজত থেকে ২৯ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

সেলিনা বেগম গতকাল বুধবার গাজীপুর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত অন্য পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার ও লুণ্ঠিত বাকি টাকা উদ্ধারে অভিযান চলছে।

মো. আজাদ মিয়া জানান আরও জানান, ডাকাতেরা কারখানার সীমানাপ্রাচীর টপকে ভেতরে প্রবেশ করেন এবং কারখানার সব সিসি ক্যামেরা নিষ্ক্রিয় করে ফেলেন। পুলিশ যেন বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাঁদের অনুসরণ করতে না পারে, সে জন্য তাঁরা তাঁদের ব্যবহৃত মুঠোফোনগুলো রাস্তাতেই ভেঙে ফেলেন।