লেখক মুশতাকের মৃত্যুর ঘটনার বিচার ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি

কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনার বিচার ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দ্রুত বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে
ছবি: দিনার মাহমুদ


কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনার বিচার ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দ্রুত বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন থেকে এই দাবি জানানো হয়।

সংগঠনটির সভাপতি ভবানী শংকর রায়ের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক শাহীন মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, ন্যাপের জেলা সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, বাসদের জেলা সমন্বয়ক নিখিল দাস, সিপিবির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবর্তী, সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি জিয়াউল ইসলাম, প্রদীপ ঘোষ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা, সমমনা সভাপতি দুলাল সাহা, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দিন, গণসংহতি আন্দোলন জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন প্রমুখ।

রফিউর রাব্বি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার করে কারাগারে মুশতাক আহমেদকে হত্যা করা হয়েছে। এই আইনটি বাতিলের দাবিতে সারা দেশ থেকে প্রতিবাদ হচ্ছে। নির্বাচনের আড়াই মাস আগে এই আইনটি করা হয়েছিল, যাতে নির্বাচন নিয়ে কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদ করতে না পারে, সরকারের নগ্ন চেহারা দেশের মানুষসহ বিশ্ববাসীর কাছে উদ্‌ঘাটিত না হয়। জনগণকে সেই ভয় দেখানোর জন্য ওই আইন করা হয়েছে। বিভিন্ন অজুহাতে ওই আইনে অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য আমাদের আইয়ুব খান-এরশাদের শাসনামলের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তাঁরা জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে ঘাতকদের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তাঁদের অত্যাচার, নিপীড়ন, খুন খারাবির মধ্যে বিভিন্ন জনগণের মতপ্রকাশকে তাঁরা হরণ করেছেন। বিভিন্ন জনকে নির্বিচারে হত্যা করেছেন। বিচারের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন।’

সংবিধানের ৩৯ ধারায় নাগরিকের চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে রফিউর রাব্বি বলেন, চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা তো দূরের কথা, এই সরকার কথা বলার স্বাধীনতাও হরণ করেছে। সরকারের অনিয়ম, দুর্নীতি, দুঃশাসন, খুন-খারাবি, লুটপাট এগুলোর বিরুদ্ধে জনগণ যাতে কথা বলতে না পারে, সে জন্যই এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এই আইন দিয়ে সরকার ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে। অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও কারাগারে আটক কার্টুনিস্ট কিশোরের মুক্তির দাবি করেন তিনি।

বক্তারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে লেখক মুশতাক আহমেদকে গ্রেপ্তারের পর ১১ মাস কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। ৬ বার তাঁর জামিন চাওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁকে জামিন দেওয়া হয়নি। কারাগারে বন্দী অবস্থায় তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। কারাগারে আটক কার্টুনিস্ট কিশোরকে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় এই আইনের বাতিলের দাবিতে প্রগতিশীলদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেন তাঁরা।