লোকজন হাতে তুলে নিলেন কোদাল-ডালি, তৈরি হলো দেড় কিমি রাস্তা

স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা তৈরি করছেন গ্রামবাসী। নওগাঁর রানীনগর উপজেলার আতাইকুলা গ্রামেছবি: প্রথম আলো

দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় রাস্তা পরিণত হয়েছিল ‘জমি’তে। জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধরনা দিয়েও সেটি পুনর্নির্মাণ করানো যায়নি। বাধ্য হয়ে গ্রামের লোকজন হাতে তুলে নেন কোদাল-ডালি। লেগে পড়েন কাজে। নির্মাণ করেন দেড় কিলোমিটার রাস্তা।

এ ঘটনা নওগাঁর রানীনগর উপজেলার আতাইকুলা গ্রামে। আশপাশের গ্রামের শতাধিক লোকজন প্রায় এক মাস স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে বিশ্ববাঁধের তজের মোড় থেকে বড়ধর খাল পর্যন্ত রাস্তাটি নির্মাণ করেছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মেহেদী হাসান বলেন, গ্রামবাসী নিজেদের উদ্যোগে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করেছেন—এটি খুব ভালো কাজ। রাস্তাটিকে স্থায়ী করতে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে প্রস্তাব পাঠানো হবে।

গ্রামবাসী রাস্তাটি ব্যবহার করতে পারতেন না। বিলের জমি থেকে ধান আনতে কৃষকদের বেশি মজুরি দিতে হতো।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, রানীনগরের সবচেয়ে বড় বিল মুনছুর। এর আশপাশে প্রায় সাত শ হেক্টর ফসলি জমি রয়েছে। এসব জমি বছরের প্রায় ছয় মাস পানিতে ডুবে থাকে। এসব জমি থেকে ধান বাড়িতে আনার জন্য দেড় কিলোমিটারের ওই রাস্তা রয়েছে। সেটিও বর্ষা মৌসুমে ছয় মাস পানির নিচে থাকে। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় রাস্তাটি জমিতে পরিণত হয়।

এ কারণে গ্রামবাসী রাস্তাটি ব্যবহার করতে পারতেন না। বিলের জমি থেকে ধান আনতে কৃষকদের বেশি মজুরি দিতে হতো। রাস্তাটি পুনর্নির্মাণের জন্য জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধরনা দিয়েও কাজ হয়নি। বাধ্য হয়ে মাসখানেক আগে গ্রামের লোকজনই রাস্তাটি পুনর্নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। শতাধিক লোক পালা করে কাজ করে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তাটি তৈরি করেন।

আতাইকুলা গ্রামের রণজিৎ সাহা বলেন, ‘রাস্তা না থাকায় জমি থেকে ধান আনতে খুব কষ্ট ও খরচ বেশি হতো। এই দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেতে আমরা অর্থ ও শ্রম দিয়ে রাস্তাটি তৈরি করেছি।’

উপজেলা প্রকৌশলী শাহ মো. শহীদুল হক বলেন, রাস্তাটি আরও ভালো করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।