লোকালয়ে এসে বিপাকে দলছুট হনুমানটি

গাছে আশ্রয় নিয়েছে দলছুট হনুমানটি। শুক্রবার বিকেলে সান্তাহার জংশন স্টেশনের ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে
ছবি: প্রথম আলো

লোকালয়ে এসে বিপাকে পড়েছে দলছুট হনুমানটি। এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় ছুটে ফিরছে। মানুষ খাবার ছুড়ে দিচ্ছে। কিন্তু প্রাণীটি খাচ্ছে না। শুঁকেই চলে যাচ্ছে। খাবার পছন্দসই হচ্ছে না। অনাহারে দুর্বল হয়ে গেছে প্রাণীটি।

প্রায় এক সপ্তাহ নওগাঁ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ছিল হনুমানটি। দুদিন আগে চলে এসেছে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার জংশন এলাকায়।

খাবারের পাশাপাশি হনুমানটির বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে মানুষের অত্যাচার। যেখানেই যাচ্ছে, সেখানেই জড় হচ্ছে শত শত উৎসুক মানুষ। কেউ তার দিকে ছুড়ছে ঢিল, আবার কিশোরদের মধ্যে কেউ করছে লাঠিপেটা। হনুমানটিকে রক্ষা বা উদ্ধার করার কেউ নেই।

পাঁচ-ছয় দিন নওগাঁ জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় বিচরণ করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে হনুমানটিকে উদ্ধারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

শুক্রবার দুপুরে হনুমানটিকে দেখা যায় সান্তাহার জংশন স্টেশনের একটি গাছে। বহু মানুষ ও ট্রেনের যাত্রীরা তাকে দেখার জন্য সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

সান্তাহার জংশন স্টেশনের পত্রিকার এজেন্ট দিলদার হোসেন বলেন, ‘ভাই, হনুমানটিকে রক্ষা করেন। ওর বিষয়ে কিছু লেখেন, যাতে প্রশাসনের কারোর নজর পড়ে। হনুমানটিকে দ্রুত উদ্ধার করে নিয়ে না গেলে, মানুষের অত্যাচার ও অনাহারে এটি মারা নিশ্চিত যাবে।’

ট্রেনের কয়েক যাত্রীও হনুমানটিকে রক্ষা করার জন্য অনুরোধ করেন।

হনুমানটি সান্তাহার শহরে আসার পর এটিকে উদ্ধারের বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাতে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্রাবণী রায়ের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘হনুমানটিকে উদ্ধারের জন্য উপজেলা বন কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। আশা করছি, শুক্রবার সকালের মধ্যে এটিকে বন বিভাগ নিয়ে যাবে।’

অবশ্য শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত হনুমানটিকে উদ্ধারে বন বিভাগের কাউকে পাওয়া যায়নি। অনেকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলেও কাজ হয়নি।

আদমদীঘি উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান মুঠোফোনে বলেন, ‘বিষয়টি ইউএনও মহোদয় আমাকে জানিয়েছেন। কিন্তু হনুমানটি ধরার কোনো সরঞ্জাম আমাদের কাছে না থাকায় এটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি ঢাকার প্রধান কার্যালয়কে জানানো হয়েছে।’