শয্যা–স্যালাইনের সংকট

গতকাল দুপুর পর্যন্ত বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৮০ জন রোগী। শয্যা না পাননি অনেকে।

শয্যা–সংকটের কারণে হাসপাতালের প্রবেশপথের মেঝেয় বিছানা পেতে রোগীদের রাখা হয়েছে। গতকাল বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে
ছবি: প্রথম আলো

বরগুনায় ডায়রিয়ার প্রকোপ ক্রমেই বাড়ছে। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের ভিড় বেড়েছে। শয্যাসংকটে রোগীদের হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় থাকতে হচ্ছে। এদিকে হাসপাতালে খাওয়ার স্যালাইন থাকলেও আইভি বা ইন্ট্রাভেনাস (শিরায় দেওয়া হয়) স্যালাইনের সংকট রয়েছে। বাইরে থেকে বেশি দামে রোগীদের আইভি স্যালাইন কিনতে হচ্ছে।

বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা রয়েছে আটটি। অথচ প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হচ্ছেন ৪০ থেকে ৫০ জন রোগী। গত মার্চে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৯২৮ জন ডায়রিয়া রোগী। চলতি মাসে ২০ এপ্রিল পযন্ত ৭৫৬ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত এখানে ভর্তি ছিলেন ৮০ জন রোগী। শয্যা না পেয়ে বারান্দায়, মেঝেতে রোগীদের ঠাঁই নিতে হয়েছে।

এদিকে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত এক মাসে (১৯ মার্চ থেকে ১৯ এপ্রিল) জেলায় ৩ হাজার ২০৭ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৭০ জন, আমতলীতে ৭৯৫ জন, বামনায় ১৩১ জন, বেতাগীতে ৩২৫ জন, পাথরঘাটায় ৩১৩ জন এবং বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ১ হাজার ২৭৩ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। গত এক সপ্তাহে (১৪-২০ এপ্রিল) ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৪০ জন এবং মারা গেছেন দুজন।

বরগুনা জেনালের হাসপাতালের মেঝে ও প্রবেশ পথে বিছানা করে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সদর উপজেলার বড়ইতলা গ্রামের নিলুফা বেগম গতকাল মঙ্গলবার সকালে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি বলেন, তাঁকে কোনো ওষুধ দেওয়া হয়নি। বাইরে থেকে স্যালাইন কিনে হাসপাতালে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এ সম্পর্কে হাসপাতালের ভান্ডাররক্ষক জসীম উদ্দিন বলেন, হাসপাতালে ডায়রিয়ার আইভি স্যালাইন মজুত নেই। তবে খাবার স্যালাইন মজুত আছে ৫০ হাজার।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সোহরাব উদ্দীন বলেন, হাসপাতালে জনবলসংকট, ডায়রিয়া রোগীদের জন্য শয্যাসংকট রয়েছে। হঠাৎ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলছে। রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে চিকিৎসকদের বেগ পেতে হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ওষুধের সংকট রয়েছে।

সিভিল সার্জন মারিয়া হাসান বলেন, দূষিত পানি ব্যবহারের কারণে মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। স্যালাইনের সংকট থাকলেও কিছুটা সমাধান হয়েছে। মানুষকে সচেতন করার জন্য বিভিন্নভাবে প্রচার চালানো হচ্ছে।