শরীয়তপুরে ডেপুটি জেলার বরখাস্ত, জেলারকে প্রত্যাহার

শরীয়তপুর জেলা কারাগার থেকে ভুল করে অন্য হাজতির পরিবর্তে লিটন ফরাজি (২৮) নামের এক হাজতিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় জেলা কারাগারের ডেপুটি জেলার হোসেনুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত ও জেলার আমীরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যায় এ–সংক্রান্ত চিঠি শরীয়তপুর জেলা কারাগারে পৌঁছায়। এর আগে গত মঙ্গলবার কারারক্ষী ইব্রাহীমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

জেলা কারাগার সূত্রে জানা যায়, গোসাইরহাট থানার একটি চুরির ঘটনার মামলার আসামি লিটন ফরাজি ও লিটন সিকদার। তাঁরা দুজন রাজবাড়ী ও খুলনার দুটি মামলারও আসামি। লিটন ফরাজি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার দামুরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা। আর লিটন সিকদার খুলনার খালিশপুরের বাসিন্দা। গত ১১ মার্চ তাঁদের শরীয়তপুর জেলা কারাগারে আনা হয়।

রোববার শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে গোসাইরহাট থানার ওই মামলায় তাঁদের জামিন দেওয়া হয়। আর খুলনা ও রাজবাড়ীর মামলায় লিটন সিকদার জামিনে থাকলেও লিটন ফরাজি জামিনে ছিলেন না। রোববার শরীয়তপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে ওই জামিনের কাগজ কারাগারে পৌঁছালে কারা কর্তৃপক্ষ লিটন সিকদারকে না ছেড়ে লিটন ফরাজিকে সন্ধ্যায় মুক্তি দেয়। লিটন সিকদারকে আটক রাখা হয়। লিটন সিকদারের স্বজনেরা বিষয়টি নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। তখন তাঁদের নজরে আসে নামের ভুলে লিটন ফরাজি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। পরে সোমবার রাতে লিটন সিকদারকে জেলা কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। তবে লিটন ফরাজিকে এখনো খুঁজে পায়নি কারা কর্তৃপক্ষ।

ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কারা কর্তৃপক্ষকে জানান শরীয়তপুর জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক (জেল সুপার) গোলাম হোসেন। কারা কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি তদন্তের জন্য বরিশাল বিভাগের ডিআইজি (প্রিজন) টিপু সুলতানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। মঙ্গলবার তারা শরীয়তপুর জেলা কারাগার পরিদর্শন করে ঘটনাটির তদন্ত করে।
এ ঘটনায় বুধবার কারা মহাপরিদর্শক মোমিনুর রহমান ডেপুটি জেলার হোসেনুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। আর কারাগারের জেলার আমীরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করেন। তাঁকে ঢাকা বিভাগীয় কারা উপ মহাপরিদর্শকের দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে জেলা কারাগারের সুপার গোলাম হোসেন ও জেলার আমীরুল ইসলামের মুঠোফোনে চেষ্টা করেও তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। একাধিকবার ফোন দিলে তাঁরা ফোন ধরেননি।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান ডেপুটি জেলারকে বরখাস্ত ও জেলারকে প্রত্যাহারের তথ্য নিশ্চিত করেন।