শাল্লায় হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ২২ জন কারাগারে

সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়িতে বুধবার হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে
ছবি: সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ২২ জনকে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ও শুক্রবার সকালে তাঁদের গ্রেপ্তার করে শাল্লা ও দিরাই থানার পুলিশ।

নোয়াগাঁও গ্রামের মানুষের বাড়িঘরে বুধবার সকালে পার্শ্ববর্তী চারটি গ্রামের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করেন। এতে ৯০টি ঘরবাড়ি, একটি মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হামলাকারীরা এ সময় লুটপাট চালান। ঘরের জিনিসপত্র ও টাকাপয়সা নিয়ে যান। খবর পেয়ে প্রশাসন ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শাল্লা থানায় দুটি মামলা হয়। একটি দায়ের করে শাল্লা থানার পুলিশ। থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বাদী হয়ে দায়ের করা ওই মামলায় ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। আরেকটি মামলা করেন নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার। ওই মামলায় ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

সুনামগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক সেলিম নেওয়াজ জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার ২২ জনকে পুলিশ বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁদের আদালতে হাজির করা হলে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।

পুলিশ, জনপ্রতিনিধি ও ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার দিরাই উপজেলা শহরে আয়োজিত এক সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী ও মাওলানা মামুনুল হক বক্তব্য দিয়ে যান। পরে মাওলানা মামুনুল হককে নিয়ে নিজের ফেসবুকে নোয়াগাঁও গ্রামের যুবক ঝুমন দাস (২৮) আপত্তিকর পোস্ট দেন বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিলে মঙ্গলবার রাতে নোয়াগাঁও গ্রামবাসীই ঝুমনকে পুলিশে ধরিয়ে দেন। এরপরও বুধবার সকালে আশপাশের শাল্লা উপজেলার কাশিপুর, দিরাই উপজেলার নাসনি, সন্তোষপুর ও চণ্ডীপুর গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ লাটিসোঁটা নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামের পাশের ধারাইন নদের তীরে গিয়ে অবস্থান নেন। পরে সেখান থেকে শতাধিক লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামে দিয়ে মানুষের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা চালান।

আরও পড়ুন