শাল্লায় হামলায় ক্ষতিগ্রস্তরা পেলেন টাকা–ঢেউটিন–চাল

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে হামলার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দুই দফা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে নোয়াগাঁও গ্রামে এই সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়।

সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন নোয়াগাঁও গ্রামে গিয়ে ৯১টি পরিবারকে ৫ লাখ টাকা এবং ৫০টি পরিবারকে ৫০ বান্ডিল ঢেউটিন ও ৩ হাজার টাকা করে তুলে দেন। এর আগে শুক্রবার একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা, ৩২ বান্ডিল ঢেউটিন ও ৮ মেট্রিক টন চাল সহায়তা দেওয়া হয়। এ সহায়তা তুলে দেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মো. মশিউর রহমান। সরকারের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ১০ লাখ ৯০ হাজার টাকা, ৮২ বান্ডিল ঢেউটিন ও ৮ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হয়েছে।

গতকাল বিকেলে সহায়তা বিতরণকালে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদ ইকবাল চৌধুরী, শাল্লা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল আমিন চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সরকারি সহায়তার বাইরে গতকাল সন্ধ্যায় স্থানীয় সাংসদ জয়াসেন গুপ্তার পক্ষ থেকে ৯০টি পরিবারকে ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়।

সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে দুই লাখ টাকা। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি নুরুল হুদা গ্রামে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের হাতে এ সহায়তা তুলে দেন। এ ছাড়া জেলা যুবলীগের পক্ষ থেকে ৯০টি পরিবারকে চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, লবণসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সেখানে দুদিন অবস্থান করে দলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এম এনামুল কবির গ্রামের লোকজনকে প্রয়োজনীয় খাদ্যসহায়তা দেন। তিনি কয়েকটি পরিবারে শিশুখাদ্য দিয়েছেন। ঘটনার দিনই তাৎক্ষণিকভাবে র‌্যাবের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়। এদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল পরিদর্শনে এসে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা সহায়তা দিয়ে গেছে।

১৭ মার্চ বুধবার সকালে ফেসবুকে হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হককে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ তুলে পাশের চার গ্রামের মানুষ লাঠিসোঁটা নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা চালান। এ সময় বাড়িঘর ও মন্দির ভাঙচুর করা হয়েছে। ঘটেছে লুটপাটের ঘটনাও। এ ঘটনায় শাল্লা থানায় দুটি মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।