শাহজাদপুরে দেখা দিয়েছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ

লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরুটি। সোমবার দুপুরে শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় গরুর ‘লাম্পি স্কিন’ রোগ দেখা দিয়েছে। কোরবানির ঈদের আগে হঠাৎ এমন রোগ দেখা দেওয়ায় কৃষক ও খামারিরা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। ইতিমধ্যে উপজেলার বেশ কিছু গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত গরুগুলোকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো গরু মারা যায়নি।

শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৭ হাজার খামারে প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার গরু আছে। এ বছর খামারি ও প্রান্তিক কৃষকেরা কোরবানির জন্য ৭০ হাজারের বেশি গরু, ছাগল ও ভেড়া বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন। এর মধ্যে গরু ৩৬ হাজার ৪৬১টি, ছাগল ও ভেড়া ২৪ হাজার ২৮০টি। এখন পর্যন্ত উপজেলায় দুই শতাধিক গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার পোতাজিয়া গ্রামে সরেজমিনে জানা যায়, খামারি ফরহাদ হোসেনের পাঁচটি, গোলাম মোর্শেদের একটি, মানিক ব্যাপারীর একটি ও ছোট চামতারা গ্রামের ইয়ামিন মোল্লার দুটি গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
ইয়ামিন মোল্লা বলেন, তিন-চার দিন আগে প্রথমে একটি গরুর এ রোগ দেখা দেয়। গরুটির চিকিৎসা চলা অবস্থায় আরও একটি গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়। তাঁর খামারে নয়টি গরু আছে। দুটি অসুস্থ হওয়ায় তিনি চিন্তায় আছেন।

গরুর লাম্পি স্কিন রোগ ছোঁয়াচে না হওয়ায় দুশ্চিন্তার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা গরুতে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। উপজেলায় তিন বছর ধরে গরুর লাম্পি স্কিন রোগটি দেখা দিয়েছে। বর্ষা মৌসুমে এটি বেশি হয়। আক্রান্ত গরুগুলোকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সাত থেকে আট দিনের চিকিৎসায় আক্রান্ত গরু সুস্থ হয়ে ওঠে।’

কোরবানির জন্য এবার দুটি গরু প্রস্তুত করেছেন গোলাম মোর্শেদ হোসেন। এর মধ্যে একটি গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। সেটির চিকিৎসা চলছে।

পোতাজিয়া গ্রামের ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমার খামারে পাঁচটি গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। গরুর শরীরের চামড়া ফুলে উঠে অনেকটা দাগ হয়ে গেছে। তবে কয়েক দিনের চিকিৎসায় তিনটি গরু অনেকটাই ভালো হয়ে উঠেছে।’

গ্রামের পশুচিকিৎসক সাইদুল ইসলাম বলেন, এ রোগে আক্রান্ত হলে গরুর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলে যায়, শরীরে জ্বর হয়। এক সপ্তাহে পোতাজিয়া ও আশপাশের গ্রামের দুই শতাধিক গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। চিকিৎসায় ইতিমধ্যে অর্ধেক ভালো হয়েছে। বাকিগুলোর চিকিৎসা চলছে। তবে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে কোনো গরু মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।