শাহজালালে আন্দোলন থামানোর প্রক্রিয়াগুলো অমানবিক ও দানবীয়

দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল আজ বুধবার সকালে শিক্ষার্থীদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান। এরপর বেলা সোয়া ১১টার দিকে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেনছবি: প্রথম আলো

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে নানা অপচেষ্টার নিন্দা জানিয়েছেন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তাঁর ভাষায় এগুলো অমানবিক, নিষ্ঠুর ও দানবীয় ছিল।

দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল আজ বুধবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে শিক্ষার্থীদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান। এরপর বেলা সোয়া ১১টার দিকে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টা ৫৪ মিনিটে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে আসেন। এরপর ৪টার দিকে তিনি অনশনস্থলে যান। সেখানে গিয়ে তিনি অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তাঁর স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হক তাঁর সঙ্গে ছিলেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে বিভিন্ন ধরনের অপচেষ্টার নিন্দা জানিয়েছেন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলছি, এই ছেলেমেয়েদের আন্দোলনকে থামানোর জন্য যে প্রক্রিয়াগুলো নেওয়া হয়েছে, সেটা অমানবিক, নিষ্ঠুর, দানবীয়। আমি ধরেই নিয়েছিলাম, এখানে একটা মেডিকেল হেলথ থাকবে। তাঁরা কন্টিনিউয়াসলি এই ছেলেমেয়েদের দেখবে। আমি খুবই ব্যথা পেয়েছি মনে, যখন দেখেছি এখানে কোনো রকম মেডিকেল হেলথ সুবিধা নাই। ছেলেমেয়েরা যখন চেষ্টা করেছে মেডিকেল হেলথ আনার জন্য, তাঁরা সেটা আনতে পারে নাই।’

শিক্ষার্থীরা তাদের কথা শুনে অনশন ভাঙায় নিজের সন্তুষ্টির কথা জানান মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি বলেন, ‘আমি ও প্রফেসর ইয়াসমিন হক গত রাতে ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে ভোররাতে এখানে পৌঁছাই। আমরা আমাদের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলি। আমরা তাঁদের অনুরোধ করি, তোমাদের প্রাণ অনেক মূল্যবান। এই প্রাণ এই রকম একজন মানুষের জন্য তোমরা বিপদগ্রস্ত করবে না। তারা আমাদের অনুরোধ রক্ষা করে আজকে সকালে সবাই মিলে অনশন ভঙ্গ করেছে। আমি আমার জীবনে এর থেকে বেশি আনন্দ কখনো পাই নাই। আমি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ। এখন তাদের হাসপাতালে নিতে হবে, তারা যেন সুস্থ হয়ে উঠে ঠিকভাবে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’

মুহম্মদ জাফর ইকবাল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর অবসরে যান। এর আগে ১৯৯৪ সালের ডিসেম্বরে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। অবসরের পর তিনি ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। গতকাল দিবাগত রাতে ঢাকা থেকে সড়কপথে তিনি সিলেটে আসেন।

আরও পড়ুন