শিকলে আটকে আছে শিশুবেলা

মায়ের সঙ্গে শারমীন। বুধবার পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা শহরের হাসপাতাল সড়কের একটি বিপণিবিতানের সামনে
প্রথম আলো

বয়স তার আট। এই বয়সে সমবয়সীদের সঙ্গে খেলাধুলা করার কথা তার। ছোটাছুটি করার কথা রাস্তাঘাটে। কিন্তু শিকলে বন্দী তার এই শিশুবেলা। মানসিক সমস্যার কারণে প্রায় এক বছর ধরে তাকে শিকল দিয়ে আটকে রেখেছেন মা–বাবা।

ওই শিশুর নাম শারমীন। হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান সে। তার বাবার নাম আলম মোল্লা (৬০) আর মায়ের হালিমা বেগম (৫৫)। পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামে তাঁদের বাড়ি।

গতকাল বুধবার সকালে শারমিনের সঙ্গে দেখা হয় বাউফল উপজেলা শহরের একটি বিপণিবিতানের সামনে। সঙ্গে তার বাবা ও মা ছিলেন। তাঁদের অভাবের সংসার। ভিক্ষা করে সংসার চালান তাঁরা।

মেয়ে শারমীনকে শিকলবন্দী করে রাখার বিষয়ে হালিমা বেগম বলেন,‘এক বছর হয় আমার মাইয়াটার মাথা খারাপ হইছে। মন যেইহানে চায় হেইহানে চইল্লা যায়। তাই শিকল দিয়া আটকাইয়া রাহি। ওর (শারমিনের) বাবা আর আমি অন্যের দুয়ারে হাত পেতে যা পাই তা দিয়ে সংসার চালাই।’ তিনি আরও বলেন, হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে গোসল, খাওয়াদাওয়া ও ঘুমানোর সময়ও শারমিনের হাতে শিকল লাগিয়ে তালা মেরে রাখা হয়।

শারমিনের বাবা আলম মোল্লা বলেন,‘অভাবের সংসার। মাইয়াডারে চিকিৎসা করানোর কোনো টাকা নাই। তাই শিকল দিয়ে আটকে রাখি।’

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা এ এস এম সায়েম বলেন,‘শারমিন মানসিক ভারসাম্যহীন। চিকিৎসা করানো হলে সে ভালো হয়ে যাবে।’