শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্পর্কের ‘চরম অবনতি’ হওয়ায় ‘মর্মাহত’ শাহজালালের ডিনরা

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যকার সম্পর্কের চরম অবনতি হচ্ছে দাবি করে বিবৃতি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি অনুষদের ডিনরা। বুধবার বিকেলে দেওয়া এই বিবৃতিতে চলমান ঘটনার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তাঁরা।

বিবৃতিতে ডিনরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে গত কয়েক দিনে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হওয়ায় তাঁরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় উপাচার্য কোষাধ্যক্ষসহ বিভিন্ন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী লাঞ্ছিত হওয়ায় তাঁরা মর্মাহত। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্পর্কের চরম অবনতি হচ্ছে। বিবৃতিতে চলমান অগ্রগতি ও মর্যাদা সমুন্নত রাখতে সবার পারস্পরিক সহযোগিতার আহ্বান জানান তাঁরা।

বিবৃতি দেওয়া ডিনরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ফিজিক‌্যাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন মো. রাশেদ তালুকদার, স্কুল অব ‌অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেস অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন মো. আরিফুল ইসলাম, স্কুল অব সোশ‌্যাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন দিলারা রহমান, স্কুল অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অনুষদের ডিন মো. খয়রুল ইসলাম, স্কুল অব অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড মিনারেল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন রোমেল আহমেদ ও স্কুল অব লাইফ সায়েন্সেস অনুষদের ডিন মো. কামরুল ইসলাম।

সোমবার থেকে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যকে পদত্যাগের জন্য আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন তাঁরা। তবে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, এর মধ্যে পদত্যাগ না করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেছেন।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার পরও মেসভাড়ায় কোনো ছাড় না দেওয়াসহ একাধিক ‘অন্যায্য’ সিদ্ধান্তে অনেক দিন ধরে তাঁরা ক্ষুব্ধ ছিলেন। হলের ছাত্রীদের বিক্ষোভ শুরুর পর সেই ক্ষোভ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আরও জোরালোভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

এ আন্দোলনের সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। গত শনিবার সন্ধ্যার দিকে ছাত্রলীগ হলের ছাত্রীদের ওপর হামলা চালায়।

পরদিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও তাঁদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। ওই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার ঘোষণা দিলেও, শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, খুলনা ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।