শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায় উচ্চতর বেতন স্কেল পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম আবদুর রহিম। তিনি বালিয়াকান্দি উপজেলার জাবরকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি উপজেলার শালমারা গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয় ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকের চাকরির বয়স ১০ বছর পেরোলে বেতন পরবর্তী স্কেলে উন্নীত হয়। ইতিমধ্যে সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে ৯৫ জন উচ্চতর বেতন স্কেল পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। তাঁদের মধ্যে ২০২০ সালে উচ্চতর স্কেল পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন ৪০ জন, ২০১৯ সালে ৩১ জন এবং ২০১৮ সালে ২৪ জন। এসব শিক্ষকদের ৯৩ জনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরে পাঠানো হয়। দুজন শিক্ষকের তথ্যাদি রোববার সকাল পর্যন্ত পাঠানো হয়নি। তাঁরা হলেন ফজলে আলী আনছারী মিয়া ও মতিউল ইসলাম (তাঁরা ঘুষের এক হাজার টাকা দেননি)। অভিযোগ উঠেছে, প্রত্যেক শিক্ষকের কাছ থেকে এক হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়, হিসাবরক্ষণ অফিসে ঘুষ দেওয়ার কথা বলে এ টাকা নেওয়া হয়।

শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রহিম উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি প্রথমে শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে বলেন। কাগজপত্র দেওয়ার সময় অফিসের খরচ বাবদ এক হাজার টাকা করে দিতে বলেন। অন্যথায় নিজের কাজ নিজেকে করতে বলেন। এতে বাধ্য হয়েই শিক্ষকেরা এক হাজার টাকা করে দেন।

বাওনারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফজলে আলী আনছারী মিয়া বলেন, ‘আমি অফিসে কাগজপত্র জমা দিয়েছি গত মাসে। এ সময় রহিম এক হাজার টাকা দিতে বলেছিলেন। হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, টাকা না দিলে ফাইল যাবে না, আমি টাকা দিইনি। এ কারণে আমার কাগজপত্র জেলা অফিসে পাঠায়নি। কিন্তু অন্য সবার কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। আগেও ঘুষ না দেওয়ায় আমার ছুটি নিয়ে খুব ঝামেলা করেছে।’

এ বিষয়ে কথা হয় বালিয়াকান্দি শিক্ষা কর্মকর্তার অফিস সহকারী উজ্জ্বল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ওই দুই শিক্ষক তাঁদের এসিআর জমা দেননি, এ কারণে সই করানো হয়নি। এসিআর পাওয়ার পর রোববার সই করানো হয়েছে। আজই পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আমি কারও কাছ থেকে কোনো টাকা নিইনি। আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ মিথ্যা।’

অভিযোগ অস্বীকার করেন সহকারী শিক্ষক রহিম। তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদের কাছ থেকে এখনো কোনো টাকাপয়সা নেওয়া হয়নি। আমরা ১০ জনের একটি কমিটি করেছি। কারণ, একসঙ্গে কাজ করলে সুবিধা হয়। কমিটির উদ্যোগে শিক্ষকদের সব কাজ করে দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি হওয়ার পর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। এরপর আমি এসব জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে পৌঁছে দিয়েছি। এতে আমার প্রায় ছয় হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আমি কোনো স্বার্থ ছাড়াই এ টাকা খরচ করেছি। তবে শিক্ষকদের এ খরচের টাকা দেওয়ার কথা রয়েছে।’