শিক্ষকদের গুলির হুমকি দেওয়ায় নিন্দা ও ক্ষোভ রাবি শিক্ষক সমিতির

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

শিক্ষকদের গুলি করার হুমকি দেওয়ায় নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষক সমিতি। একই সঙ্গে হুমকিদাতাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।

আজ বুধবার বিকেলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক সমিতি এই দাবি জানায়। সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. সাইফুল ইসলাম ফারুকী ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. আশরাফুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত বিবৃতিটি সংবাদমাধ্যমে পাঠানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ৪ মে ২০২১ একটি নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে। এদিন সকালে সিন্ডিকেট সভা সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের দুর্নীতিবিরোধী অংশের শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচির সময় চাকরিপ্রত্যাশী ও বহিরাগতদের মধ্যে থেকে আন্দোলনরত শিক্ষকদের গুলি করার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ সময় তাঁদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্কে আন্দোলনরত শিক্ষকদের কেউ কেউ ধাক্কাধাক্কির শিকার হন। এর আগে ২ মে একই স্থানে চাকরিপ্রত্যাশীরা উপস্থিত প্রক্টরকে লক্ষ্য করে চাকরির আবেদনের টাকা ফেরত চেয়ে উচ্চবাচ্য করেন। উপাচার্য এবং তাঁর অনুসারী শিক্ষকসহ সব শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার হুমকি দেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক দিন ধরে চলা এসব ঘটনায় শিক্ষক সমিতি ক্ষুব্ধ, বিস্মিত। চাকরিপ্রত্যাশীদের কেউ কেউ সরকারদলীয় ছাত্র ও যুব সংগঠনের সঙ্গে জড়িত এবং তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী বলে গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে একজন যুবক আন্দোলনরত শিক্ষকদের গুলি করার হুমকি দেন। যতটুকু জানা গেছে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আবদুস সোবহানের মেয়াদ শেষ হবে ৬ মে। মেয়াদ শেষের আগে ২ মে তিনি ফাইন্যান্স কমিটির একটি সভা ডেকেছিলেন। কিন্তু এদিন ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতা–কর্মীরা প্রশাসন ভবন ও ভিসির বাসভবনে তালা লাগিয়ে দেন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়। আন্দোলনরত শিক্ষকেরাও এদিন ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান করতে থাকেন। এ অবস্থায় সেই সভাও হয়নি।

আন্দোলনরত শিক্ষকদের ভাষ্য, উপাচার্য অ্যাডহকে অনেকের নিয়োগ নিশ্চিত করতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকেছেন, এই শঙ্কায় আজ বুধবার তাঁরা উপাচার্য, দুই সহ-উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় নিয়োগপ্রত্যাশীরাও সেখানে অবস্থান করতে থাকেন। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে ভেতরে ঢুকতে চাইলে নিয়োগপ্রত্যাশীদের সঙ্গে তাঁদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয় এবং সেখানেই শিক্ষকদের গুলি করার হুমকি দেওয়া হয়। এ রকম পরিস্থিতিতে সিন্ডিকেট সভা স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এমন পরিস্থিতি একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

বিবৃতিতে সূত্রে জানা যায়, বর্তমান উপাচার্য আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের একটি অংশের শিক্ষকেরা দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ ও আন্দোলন করে আসছেন। উপাচার্যের মেয়াদ শেষের এই সময়ে এসে চাকরিপ্রত্যাশীদের সঙ্গে শিক্ষকদের এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হওয়া এবং তাতে উপাচার্যসহ আন্দোলনরত শিক্ষকদের লাঞ্ছনা ও হত্যার হুমকি দেওয়ায় তাঁরা উদ্বিগ্ন। হুমকিদাতাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করা হয়েছে।