‘শিক্ষার্থীরা শুধু চাকরির পেছনে ছুটবে কেন?’

শ্রীপুরে ফুল–ফুল চাষে চমক দেখানো কৃষক দেলোয়ারের হোসেনের বাগান ঘুরে দেখছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। আজ মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া পূর্বখণ্ড গ্রামেপ্রথম আলো

‘আমাদের শিক্ষার্থীরা শুধু কেন একটা পরীক্ষা দেবে, সনদ পাবে, আর চাকরির পেছনে ছুটবে? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান আমাদের ছেলেমেয়েরা উদ্যোক্তা হবে। আরও অন্য দশজনকে চাকরি দেবে। নিজেরা শুধু চাকরির পেছনে ছুটবে কেন?’

আজ মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের শ্রীপুরের কেওয়া পূর্বখণ্ড গ্রামে ফুল, ফল ও সবজিচাষি দেলোয়ার হোসেনের বাগান পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। এটি ছিল তাঁর ব্যক্তিগত সফর।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা শুধু চাকরি খুঁজবে না, উদ্যোক্তা হবে। নানা রকম প্রশিক্ষণ আমরা তাদের দেব। তাদের উদ্যোক্তা হতে শেখাব। নিজের পায়ে দাঁড়াতে শেখাব।’ শিক্ষামন্ত্রী সফল চাষি দেলোয়ার হোসেন ও তাঁর স্ত্রী শেলীর ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘ওনারা শিক্ষার্থীদের কাছে উদাহরণ হতে পারেন। আমাদের জন্য আনন্দের যে এমন একজন উদ্যোক্তা আমাদের আছেন। আমাদের মাটি এত উর্বর, এখানে ফুলের সম্ভাবনা আছে, বাজারজাতের সম্ভাবনা আছে। ওনারা (দেলোয়ার ও তাঁর স্ত্রী শেলী) যেভাবে উদ্যোক্তা তৈরি করে দিচ্ছেন, আমি বিশ্বাস করি সরকারি আরও সহযোগিতা পেলে নিশ্চয়ই এটাকে আরও বিশাল আকারে নিয়ে যেতে পারবেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকার সব সময় উদ্যোক্তাদের পাশে আছে।’

শ্রীপুরে ফুল, ফল ও সবজি চাষী দেলোয়ার হোসেন দম্পতির সাথে কথা বলছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। আজ মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া পূর্বখণ্ড গ্রামে
প্রথম আলো

দীপু মনি বলেন, ‘আমাদের দেশ থেকে আমরা সারা বিশ্বে ফুল, সবজি এখনো রপ্তানি করছি। সামনে আরও অনেক বড় পরিসরে রপ্তানি করতে পারব। ফুল রপ্তানিতেও আমরা খুব ভালো করতে পারব।’

দেলোয়ারের বাগান ‘মৌমিতা ফ্লাওয়ার্স’ পরিদর্শনের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে দীপু মনি বলেন, ‘ওনাদের বাগানটার কথা আমি শুনেছি। ওনারা বিভিন্ন ধরনের ফুলের চাষ করছেন। বিশেষ করে আমাদের দেশের আবহাওয়ায় টিউলিপ হবে, এটা কখনো কেউ ভাবতেই পারত না। অনেকেই চেষ্টা করেছিলেন, করতে পারেননি। কিন্তু ওনাদের এখানে টিউলিপটা করতে পেরেছেন। এসব কারণেই আমি খুব উৎসাহিত হয়েছি যে একটু দেখে আসি। বাগান দেখে একেবারেই মুগ্ধ হয়েছি। শুধু বাগান করা না, বৈজ্ঞানিক যে পদ্ধতিগুলো আছে, আন্তর্জাতিকভাবে মান নিয়ন্ত্রণের যেসব ব্যবস্থা আছে, ওনারা সব রকমই করার চেষ্টা করছেন। ওনারা ইতিমধ্যে দেশে ৩০০ জন উদ্যোক্তা তৈরি করেছেন। অনেককে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।’

আরও পড়ুন

ফুল চাষে সফলতা দেখিয়ে ২০১৭ সালে বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার জেতেন দেলোয়ার। বর্তমানে তিনি বিশ্বে ব্যাপক চাহিদাসম্পন্ন জি-নাইন জাতের কলার বাণিজ্যিক চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। শ্রীপুরের কেওয়া পূর্বখণ্ড গ্রামে ব্যক্তি উদ্যোগে দেলোয়ার দীর্ঘদিন ধরে ফুল, ফল ও সবজি চাষ করছেন। তাঁর বাগানে আছে গোলাপ, ওরিয়েন্টাল লিলি, টিউলিপ, জারবেরা, স্ট্রবেরি, ক্যাপসিকাম, জি-নাইন কলাসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল, ফল ও সবজি। এবার দ্বিতীয়বারের মতো দেলোয়ার তাঁর বাগানে শীতপ্রধান দেশের ফুল টিউলিপ ফুটিয়েছেন। তাঁকে নিয়ে প্রথম আলোতে ‘পাগলা চাষির কলার খেয়াল’, ‘টিউলিপ ফোটালেন দেলোয়ার’ শিরোনামে সংবাদ ছাপা হয়েছে।