শিবগঞ্জে বিএনপি প্রার্থীর ওপর দুই ঘণ্টায় তিন দফা হামলার অভিযোগ

পৌরসভা নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

বগুড়ার শিবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র পদপ্রার্থী মতিয়ার রহমানের প্রচারকাজে এবং বাসভবনে তিন দফা হামলার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীর সমর্থকেরা এই হামলা চালান বলে অভিযোগ করেছেন মতিয়ার রহমান।

হামলার ঘটনায় মতিয়ার রহমান বৃহস্পতিবার রাতে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি অভিযোগ করেন, নৌকার প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বর্তমান মেয়র তৌহিদুর রহমানের নির্দেশে তিন দফা এই হামলা চালানো হয়। এতে তুহিন নামে ধানের শীষের একজন কর্মী গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তৌহিদুর রহমান হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নির্বাচনী মাঠ অনুকূলে না হওয়ায় ভোটের ফলাফল নিশ্চিত পরাজয় জেনেই তিনি ‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’ চাপিয়ে ‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের’ চেষ্টা করছেন। পাঁচ বছরে পৌরসভায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। নৌকার পক্ষে এমনিতেই গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ধানের শীষের প্রচারণায় কেন তাঁরা বাধা দিতে যাবেন? ভোটারদের অনুকম্পা পেতে হামলার নাটক সাজানো হচ্ছে বলে দাবি তৌহিদুরের।

নির্বাচনী মাঠ অনুকূলে না হওয়ায় ভোটের ফলাফল নিশ্চিত পরাজয় জেনেই তিনি (বিএনপি প্রার্থী) ‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’ চাপিয়ে ‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের’ চেষ্টা করছেন।
তৌহিদুর রহমান, আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী

সংবাদ সম্মেলনে মতিয়ার রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তিনি কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে পৌরসভার বানাইল মহল্লায় ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা চালাতে যান। সেখানে নৌকার কর্মীরা মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে এসে ধানের শীষের কর্মীদের এক দফা হামলা করেন। তিনি তাৎক্ষণিক পৌর সদরের বাসায় আশ্রয় নিলে সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে ২০০-২৫০ জন নৌকার কর্মী লাঠিসোঁটা, হকিস্টিক, রামদা হাতে বাসায় হামলা চালান। এ সময় তাঁরা বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন এবং বাসার ফটক ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ এসে হামলাকারীদের নিবৃত্ত করে।

সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে বাসা থেকে প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পৌর শহরের সোনালী ব্যাংকের সামনে আরেক দফা হামলা চালানো হয়। এ সময় জিআই পাইপের আঘাতে তুহিন নামে ধানের শীষের এক কর্মী গুরুতর আহত হন।

শুরু থেকেই নৌকার প্রার্থীর নির্দেশে ধানের শীষের প্রচারণায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। নৌকার কর্মীদের হামলা ও ভয়ভীতির কারণে ধানের শীষের কর্মীরা মাঠে দাঁড়াতেই পারছেন না।
মতিয়ার রহমান, বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী

মতিয়ার রহমান প্রথম আলোকে বলেন, শুরু থেকেই নৌকার প্রার্থীর নির্দেশে ধানের শীষের প্রচারণায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। নৌকার কর্মীদের হামলা ও ভয়ভীতির কারণে ধানের শীষের কর্মীরা মাঠে দাঁড়াতেই পারছেন না। এসব বিষয় প্রশাসনকে বলেও কোনো প্রতিকার মিলছে না।

শিবগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, নৌকা ও ধানের শীষের সমর্থকদের মধ্যে সহিংসতার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুই পক্ষকেই আচরণবিধি মেনে সহনশীলতার সঙ্গে প্রচারণা চালাতে বলা হয়েছে।

শিবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুব আলম শাহ প্রথম আলোকে বলেন, ধানের শীষের প্রার্থী মতিয়ার রহমানের কাছ থেকে হামলার মৌখিক অভিযোগ পেয়ে নৌকার প্রার্থীকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে আচরণবিধি লঙ্ঘন কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রচারণায় বাধাদানের কোনো ঘটনা ঘটবে না বলেও নৌকার প্রার্থী তৌহিদুর রহমান প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।