শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথে পরীক্ষামূলক ফেরি চালু, কাটছে না অচলাবস্থা

নাব্যতা–সংকটে বন্ধ থাকার এক দিন পর আবার শুরু হয়েছে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি নৌপথে ফেরি চলাচল। শুক্রবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে শিমুলিয়া ঘাট থেকে ১৭টি যানবাহন নিয়ে ফেরি কুমিল্লা লৌহজং চ্যানেল দিয়ে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ঘাটে রওনা হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে এ নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল।
শিমুলিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছে, ফেরিগুলো পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হচ্ছে। কোনো বাধা ছাড়া ফেরি গন্তব্যে পৌঁছাতে পারলে দুই ঘাট থেকে আরও দুটি ফেরি লোড নিয়ে যাবে। শনিবার সকাল থেকে এ নৌপথে স্বাভাবিকভাবে ফেরি চলাচলের কথা রয়েছে।

শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) ফয়সাল আহম্মেদ প্রথম আলোকে জানান, পদ্মা সেতুর ২৫ নম্বর পিলারের পাশ দিয়ে যাওয়া লৌহজং চায়না চ্যানেলটি খনন করা হয়েছে। তবে সেখানে এখনো প্রচুর পলি আসছে। বিআইডব্লিউটিএ খনন অব্যাহত রেখেছে। শুক্রবার বিকেলে পরীক্ষামূলকভাবে ফেরি চালানোর নির্দেশ আসে। তাই একটি ফেরিতে ১৭টি যানবাহন দিয়ে ছাড়া হয়েছে। ফেরিটি নিরাপদে ওই পাড়ে পৌঁছাতে পারলে, সে ঘাট থেকে কিশোরী নামে অপর একটি ফেরি আসবে। রাতে বন্ধ থাকার পর শনিবার থেকে আবার ফেরি চলাচল শুরু হতে পারে।

বিকেল পৌনে চারটার দিকে শিমুলিয়া ঘাটের ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (টিআই) মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, এ ঘাট থেকে পাঠানো ফেরিটি কাঁঠালবাড়ি ঘাটের কাছাকাছি চলে গেছে। ঘাটে ফরিদপুর নামে আরও একটি ফেরি লোড করা হচ্ছে। ঘাট পারাপারে অপেক্ষায় আছে আরও ৩০টি ট্রাক। ঘাটে নতুন গাড়ি আসার চাপ নেই। পুরোদমে ফেরি চলাচল শুরু হলে যানবাহন আসা শুরু করবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিমুলিয়া ঘাটের এক কর্মকর্তা বলেন, এ নৌপথ হয়তো আর স্বাভাবিক অবস্থাতে ফিরতে পারবে না। পদ্মা সেতুর পিলার নির্মাণের পর থেকে নদী তার গতিপথ পরিবর্তন করেছে। নদীর বিভিন্ন অংশ ভরাট হয়ে ডুবোচর জেগেছে। সেই সঙ্গে স্রোতের জন্য চায়না চ্যানেলের বাঁ ও ডান পাশের চর দুটি ভাঙছে। এতে করে চ্যানেল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। খনন করেও লাভ হচ্ছে না। এদিকে স্রোত কমতে কমতে শীত শুরু হবে। তখন সমস্যা হবে কুয়াশায়। সমস্যা একের পর এক চক্রাকারে চলতেই থাকবে। ঘাট ও নৌপথ তার স্বাভাবিক অবস্থা হারাবে।

ঘাট ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আড়াই মাস ধরে এ নৌপথে ফেরি চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। স্রোত ও নাব্যতা–সংকটের জন্য রাতে বন্ধ রেখে দিনে ফেরি চালানো হতো। এ সংকট তীব্র আকার ধারণ করে সেপ্টেম্বর মাসজুড়ে। ৩ সেপ্টেম্বর নাব্যতা–সংকটের কারণে ফেরি চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। আট দিন খনন করে লৌহজং টার্নিং পয়েন্টের চ্যানেলটি সচল করলে তিন দিন স্বল্প পরিসরে ফেরি চলে। আবার দ্বিতীয় দফায় ফেরি বন্ধ হয়। তৃতীয় দফায় ১৩ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুর পর্যন্ত ফেরি চালানোর পর নাব্যতা–সংকটে অচল হয়ে যায় ঘাট। ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ছিল ফেরি। মধ্যখানে ১০ দিন ছোট পাঁচটি ফেরি চলে। ২৭ সেপ্টেম্বর আবার বন্ধ হয় ফেরি চলাচল।