শিশুদের সাঁতার প্রশিক্ষণে অনিয়মের অভিযোগ

সিরাজগঞ্জ জেলার মানচিত্র

মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ‘পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধকল্পে শিশুদের সাঁতার প্রশিক্ষণ কর্মসূচি’ বাস্তবায়নের কাজ পেয়েছে পিপলস এডুকেশন হেলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (পিইএইচডি) ফাউন্ডেশন নামের একটি বেসরকারি সংস্থা। তাদের দাবি, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় এক হাজার শিশুকে সাঁতার শেখানো হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, আসলে তারা সাঁতার শেখায়নি। এ কাজের জন্য তারা নিয়েছে ৪৩ লাখ টাকা।

এমন অভিযোগ তদন্ত করে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় বলছে, শিশুদের সাঁতার শেখানো হয়েছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ, এ বিষয় নিয়ে শিশুদের বক্তব্য শেখানো বুলির মতো। সাঁতার প্রশিক্ষণের সময় নিয়েও ভিন্ন ভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে। প্রথমে উপকারভোগীদের যে তালিকা দেওয়া হয়েছিল, তার এক পৃষ্ঠায় যে নামের তালিকা রয়েছে, তা হুবহু ৩ থেকে ১৮ পৃষ্ঠায় রয়েছে। এখানে শুধু ক্রমিক নম্বর পরিবর্তিত হয়েছে। পিইএইচডি বলেছে, ভুলবশত এটি হয়েছে। পরে আরেকটি তালিকা দেওয়া হয়। তদন্ত কমিটি মনে করে, অভিযোগ ওঠার পর এ তালিকা তৈরি করা হয়ে থাকতে পারে বা কিছু প্রশিক্ষণ হয়ে থাকতে পারে।

বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে তদন্ত প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। এর আগে সিরাজগঞ্জের সাংসদ আবদুল আজিজ অনিয়ম নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে অভিযোগ তুলেছিলেন। মন্ত্রণালয় পরে বিষয়টি তদন্তের উদ্যোগ নেয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বাস্তবায়নকারী এনজিওর তালিকা অনুযায়ী সাতাঁর প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছে, এমন কয়েকজন শিশু প্রশিক্ষণ সম্পর্কে জানে না বলে জানিয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী এনজিও দাবি করেছে, তারা শীতের আগে করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সাঁতার শিখিয়েছে। কিছু শিশু সাঁতার শিখেছে বলে জানালেও কোন সময় সাতাঁর শেখানো হয়েছে, তারা তা জানাতে পারেনি। কেউ বলছে শীতের আগে, কেউ বলছে শীতের পরে, আবার কেউ কেউ বলছে শীতকালে সাতাঁর শেখানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, মুন্সিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জ জেলার আটটি উপজেলায় ও একটি পৌরসভায় পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধকল্পে শিশুদের সাঁতার প্রশিক্ষণ কর্মসূচির কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। মূলত ৪ থেকে ১৪ বছরের মেয়ে ও ছেলেশিশুদের কর্মসূচির উপকারভোগী হিসেবে গণ্য করা হবে। কর্মসূচির আওতায় এসব এলাকার ৪০ হাজার শিশুকে সাঁতার শেখানোর কথা।