‘শীত, বর্ষায় আগের মতো কষ্ট হয় না’

উপজেলায় তিন পর্যায়ে মোট ৩৩৮টি ঘর বরাদ্দ হয়েছে। এরই মধ্যে ৩৮টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। ২০ জুন আরও ১০০ ঘর হস্তান্তরের কথা।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বুঝে পাওয়ার পর সেখানে বসবাস শুরু করেছে একটি পরিবার। গত সোমবার নীলফামারীর ডোমারের চেয়ারম্যান পাড়া গ্রামে
প্রথম আলো

নীলফামারীর ডোমার উপজেলার পাঙ্গা মটুকপুর ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামে ২৩ বছর আগে ভূমিহীন সোহেল রানার (৫০) সঙ্গে বিয়ে হয়েছে মাজেদা বেগমের (৪০)। সোহেল রিকশা চালান আর মাজেদা ঝিয়ের কাজ করেন। মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন এই দম্পতি।

সোহেল-মাজেদার মতো উপজেলায় তিন পর্যায়ে মোট ৩৩৮টি ঘর বরাদ্দ হয়েছে। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় এসব ঘর নির্মাণের কাজ চলছে। এরই মধ্যে ৩৮টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। ২০ জুন আরও ১০০টি ঘর হস্তান্তরের কথা আছে।

গত সোমবার মধ্যপাড়া গ্রামে গেলে মাজেদা বলেন, ‘মোর বিয়া হবার ২৩ বছর হইল। অনেক চেষ্টা করি এক শতক জমিও কিনির পাই নাই। নিজের জাগাত খেরের ঘরত (কুঁড়েঘর) থাকিও শান্তি আছে। এখন সরকার হামাক পাকা বাড়ি করি দিছে। হামরা খুব খুশি।’

মাজেদা জানান, এত দিন তাঁরা ওই গ্রামের আবদুস ছালাম নামের একজনের জমিতে বসবাস করতেন। ছালাম মাজেদাদের জন্য দুই শতক জমি দান করলে সেখানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ওই বাড়ির নির্মাণ শুরু হয়।

উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানপাড়া গ্রামে এরই মধ্যে ঘর পেয়েছেন মৃত নুরুল ইসলামের স্ত্রী বেগম (৫০)। তিনি বলেন, স্বামী মারা গেছেন ২০ বছর আগে। তখন থেকে ছেলের সংসারে থাকেন। এত দিন ভাঙা ঘরে ছিলেন, এখন সরকারের দেওয়া পাকা ঘরে থাকেন। শীত, বর্ষায় আর আগের মতো কষ্ট হয় না।

ডোমার উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য গৃহনির্মাণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে ৩৮টি ঘর নির্মাণ করা হয়। গত ২৩ জানুয়ারি এসব ঘর হস্তান্তর করা হয়। একই প্রকল্পের আওতায় পরে ২০০টি ঘর বরাদ্দ হয়। এসব ঘরের নির্মাণকাজ শেষে এখন রঙের কাজ চলছে।

তৃতীয় পর্যায়ে গত ২৫ এপ্রিল আরও ১০০টি ঘর বরাদ্দ হয়। এগুলোর নির্মাণকাজ চলমান। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ভূমি ও গৃহহীনেরা এসব ঘর পাবেন।

ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা শবনম বলেন, উপজেলায় মোট খাসজমির পরিমাণ ৯০৪ একর। এর মধ্যে ৮৭৫ একর ভূমিহীনদের মধ্যে বন্দোবস্ত দেওয়া আছে। বাকি ২৯ একর জমি নিচু এলাকায়। ফলে এসব জমিতে ঘর করা যায় না। কেউ দুই শতাংশ জমি সরকারের নামে লিখে দিলে, সেখানে প্রকল্পের ঘর নির্মাণ হচ্ছে।