শের-ই-বাংলা মেডিকেলে করোনার উপসর্গ নিয়ে আরও ছয়জনের মৃত্যু

বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার উপসর্গ নিয়ে আরও ছয়জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এই হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ৫৪৬ জনের মৃত্যু হলো। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়ে ১৫৭ জন এবং উপসর্গ নিয়ে ৩৮৯ জন মারা গেছেন।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগ ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, এর আগে গতকাল বুধবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগে আটজনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে চারজন করোনা পজিটিভ এবং চারজন উপসর্গ নিয়ে মারা যান। তাঁদের পাঁচজনই মারা যান শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। গত মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টায় এই হাসপাতালে মারা যান ৯ জন রোগী।  তাঁদের মধ্যে তিনজন করোনা শনাক্ত, অন্যরা উপসর্গ নিয়ে মারা যান।

আজ সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ছয়জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য হাসপাতালের আরটি-পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুর রাজ্জাক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় এ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ২৬ জন রোগী উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। এই ওয়ার্ডে রোগী রয়েছেন ১৪৬ জন। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত রোগী ২৯ জন।

রোগীর ভিড়, সাধারণ ও আইসিইউ শয্যা বাড়ানোর তাগিদ
দক্ষিণাঞ্চলে করোনা চিকিৎসার ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে রোগীদের চাপ দিন দিন বাড়ছে। ফলে চিকিৎসকেরা যেমন চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন, তেমনি শয্যা ও নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) এবং অক্সিজেন ও অন্যান্য সরঞ্জামের সংকটে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনার (সেন্ট্রাল) পাশাপাশি সিলিন্ডারের মাধ্যমে রোগীদের জন্য অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে করোনা ওয়ার্ডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মাত্র ১২টি শয্যা দিয়ে যথাযথ সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। সেই সঙ্গে জনবল–সংকটে রোগীদের ভোগান্তি বাড়ছে।

করোনার প্রকোপ দেখা দিলে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ হাসপাতালের পূর্ব দিকের নতুন পাঁচতলা ভবনটিতে করোনা ইউনিট চালু করা হয়। প্রথম দিকে ২০ শয্যা দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও ধীরে ধীরে তা ১৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। রোগীর চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় করোনা ওয়ার্ডে শয্যার সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ১০টি আইসিইউ শয্যা পাঠানোর জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।

হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে প্রতিদিনই রোগীর ভিড় বাড়ছে। এ ওয়ার্ডের আইসিইউ শয্যার সংখ্যা মাত্র ১২টি। সবগুলো শয্যা রোগীতে পূর্ণ। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আইসিইউ শয্যা ও সাধারণ শয্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। আশা করি, দ্রুত এগুলো সংযোজন করা সম্ভব হবে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক বাসুদেব কুমার দাস বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় ছয় জেলার সবগুলো হাসপাতালে বিশেষ শয্যার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।