শেরপুরে উপজেলা পরিষদসহ ২০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, পানিবন্দী হাজারো পরিবার
ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদসহ ২০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আজ শুক্রবার মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় পানিবন্দী হয়ে পড়ে হাজারো পরিবার।
উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে ভারী বর্ষণ ও উজানে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। নদীর পানি উপচে ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের ঝিনাইগাতী, রামেরকুড়া, খৈলকুড়া, বনকালি, চতল ও আহম্মদ নগর; ধানশাইল ইউনিয়নের ধানশাইল, বাগেরভিটা, কান্দুলী, বিলাসপুর ও মাদারপুর এবং কাংশা ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর চরণতলা, আয়নাপুর, কাংশা গ্রামসহ ২০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। পানিবন্দী হয়ে পড়ে সহস্রাধিক পরিবার। তলিয়ে যায় এসব এলাকার আউশ ও সবজির খেত। পাহাড়ি ঢলে পানির তোড়ে মহারশি নদীর বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশ ভেঙে গেছে। ঝিনাইগাতী-গোবিন্দগঞ্জ সড়কের ওপর দিয়ে প্রবল বেগে ঢলের পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের রামেরকুড়া গ্রামের বাসিন্দা দ্বীন এ আমিন প্রথম আলোকে বলেন, পাহাড়ি ঢলে তাঁর মুরগির খামারটি ভেসে গেছে। খামারে প্রায় দুই হাজার মুরগি ছিল। এতে তাঁর দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বৈরাগীপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলাম বলেন, ঢলের পানিতে তাঁর দুটি আধা পাকা ঘর ভেসে গেছে।
ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শাহাদাত হোসেন দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, মহারশি নদীর পানি বেড়ে তাঁর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তিন থেকে চার শ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
শাহাদাত হোসেন আরও বলেন, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে মহারশি নদীর পানি বেড়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরসহ ঝিনাইগাতী বাজারসংলগ্ন বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। এতে পরিষদের কার্যক্রম ব্যাহত হয় এবং ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। তাই মহারশি নদীতে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আল মাসুদ প্রথম আলোকে বলেন, পাহাড়ি ঢলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে শুকনা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।