শোক দিবসে সাংসদ ও চেয়ারম্যানের পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলা

কুমিল্লার বরুড়া উপজেলায় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য মাজহারুল ইসলাম
ছবি: প্রথম আলো

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান চলাকালে স্থানীয় সাংসদ ও উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুসারীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। রোববার বেলা ১১টায় বরুড়া মধ্যবাজারে এ ঘটনা ঘটে।

পাল্টাপাল্টি হামলায় কুমিল্লা-৮ (বরুড়া) আসনের সাংসদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছিমুল আলম চৌধুরীর অনুসারী বরুড়া পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য আবু মিয়া (৬০) ও বিগত পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী নাছির উদ্দিন (৩৫) এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ এন এম মইনুল ইসলামের অনুসারী ভবানীপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাজহারুল ইসলাম (২৬) আহত হয়েছেন। হামলায় আহত সাংসদের অনুসারীদের বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুসারীতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বরুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষ আছে। একপক্ষে সাংসদ নাছিমুল আলম চৌধুরী ও অন্য পক্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান এ এন এম মইনুল ইসলাম নেতৃত্ব দিচ্ছেন। রোববার সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুসারী মাজহারুল ইসলাম ফুল দেওয়ার জন্য উপজেলা পরিষদের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় মাজহারুল ইসলামকে কুপিয়ে জখম করা হয়। এ খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুসারীরা বরুড়া মধ্যবাজারে এসে মহড়া দেন।
এরপর বেলা ১১টায় বরুড়া মধ্যবাজার ঝলম বাসস্ট্যান্ডে উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুসারীরা পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য আবু মিয়া ও নাছির উদ্দিনের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। সন্ধ্যা সাতটায় পৌরসভার জিনসার এলাকায় চেয়ারম্যানের অনুসারী ইকবাল হোসেনকে (২৪) চড় দেন সাংসদের অনুসারীরা। এরপর চেয়ারম্যানের অনুসারীরা পাল্টা সাংসদের অনুসারী আরেকজনের মাথায় আঘাত করেন। তবে তাঁর নাম–ঠিকানা পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে সাংসদের অনুসারী বরুড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, ‘উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ এন এম মইনুল ইসলামের অনুসারীরা কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের লোকদের ওপর হামলা করেছেন। আমরা তাঁদের ওপর হামলা করিনি। বিষয়টি সাংসদ মহোদয়কে জানানো হয়েছে।’

এ বিষয়ে সাংসদ নাছিমুল আলম চৌধুরী বলেন, দলীয় কর্মসূচি শেষে বাড়ি ফেরার পথে আবু মিয়াকে বরুড়া মধ্যবাজার ঝলম বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মারধর ও জখম করা হয়। এ ছাড়া একই এলাকায় নাছিরের ওপর হামলা করা হয়।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ এন এম মইনুল ইসলাম বলেন, ‘আমার সঙ্গে ফুল দিতে বাড়ি থেকে আসছিলেন দলীয় কর্মী মাজহারুল ইসলাম। সাংসদের লোকজন বরুড়া মধ্যবাজারে তাঁর পিঠে কোপ দিয়ে জখম করেন। তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অন্তত ৩০টি সেলাই লেগেছে।’
বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, সাংসদের অনুসারী দুজনকে বাজারে মারধর ও জখম করেন উপজেলার চেয়ারম্যানের লোকজন। সাংসদের অনুসারীরা বাজারেই ছিলেন না। উপজেলা চেয়ারম্যানের লোকজন বাজারে মহড়া দিয়েছেন, মিছিল করেছেন।