শ্বশুরবাড়ির উঠান খুঁড়ে পাওয়া গেল গৃহবধূর লাশ

আফরোজা আকতার
ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের মহেশখালীতে নিখোঁজ হওয়ার ছয় দিন পর আফরোজা আকতার (২০) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলা গ্রামে তাঁর শ্বশুরবাড়ির উঠোনের মাটি খুঁড়ে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত আফরোজা ওই গ্রামের বাসিন্দা বদরখালী কলেজের প্রভাষক রাকিব হাসানের (৩৫) স্ত্রী। ১২ অক্টোবর থেকে আফরোজাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ ঘটনার পর থেকে রাকিব ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে চলে যান।

এ সম্পর্কে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হাই বলেন, ওই গৃহবধূকে হত্যা করার পর তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বসতবাড়ির সামনে উঠানে গর্ত করে লাশটি গুম করেছিলেন। অনেকটা সুকৌশলে ওই গৃহবধূ নিখোঁজ হয়েছেন বলে এলাকায় নানা অপপ্রচার চালান তাঁরা। পরে তাঁরা রহস্যজনকভাবে পালিয়ে যান। এ বিষয়ে সন্দেহ হলে রাকিব হাসানের আগের পক্ষের স্ত্রীর সন্তানকে (৭) জিজ্ঞাসাবাদ করে এ বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায় এবং মাটি খুঁড়ে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নয় মাস আগে রাকিব হাসান ও আফরোজা আকতারের বিয়ে হয়। আফরোজার বাবার বাড়ি উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের পুঁছড়া গ্রামে। থানা-পুলিশের ভাষ্যমতে, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই আফরোজার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন রাকিব হাসান ও তাঁর মা। একবার গুরুতর আহত হয়েছিলেন আফরোজা। এই ঘটনায় আফরোজা বাদী হয়ে গত ১২ মার্চ আদালতে একটি মামলা করেন। এ মাসের শুরুতে উভয় পক্ষের মীমাংসার ভিত্তিতে সংসার শুরু করেন আফরোজা। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কয়েক দিন পর আবারও নির্যাতন শুরু হয় আফরোজার ওপর।

পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, রাকিব হাসানের মা রোকেয়া হাসান ১২ অক্টোবর বিকেলে আফরোজার বাবাকে ফোন করে জানান, আফরোজা নিখোঁজ হয়ে গেছেন। বিষয়টি নিয়ে আফরোজার বাবার বাড়ির লোকজন তৎপর হয় এবং খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এ ঘটনার পরপরই রাকিব হাসান বাড়ি ছেড়ে চলে যান। আফরোজার নিখোঁজের ঘটনায় গত বুধবার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তাঁর বাবা মোহাম্মদ ইসহাক। পরে শুক্রবার রাকিব হাসানসহ পাঁচজনকে আসামি করে অপহরণের মামলা করেন মোহাম্মদ ইসহাক।

ওসি আবদুল হাই বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ধরার জন্য পুলিশ নানাভাবে চেষ্টা করছে।