শ্যামপুরে চিনিকল চালুর দাবিতে কাল আধা বেলা হরতাল

শ্যামপুর চিনিকল, বদরগঞ্জ, রংপুর
ফাইল ছবি

বন্ধ চিনিকল চালুর দাবিতে আগামীকাল বুধবার রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর এলাকায় আধা বেলা হরতালের ডাক দিয়েছেন চিনিকলের শ্রমিক ও আখচাষিরা। আখমাড়াই মৌসুমে শ্যামপুর চিনিকলসহ বন্ধ ছয়টি চিনিকলে মাড়াই কার্যক্রম চালুর দাবিতে এই কর্মসূচি দিয়েছে শ্যামপুর চিনিকল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন এবং আখচাষি কল্যাণ সমিতি।

আজ মঙ্গলবার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্যামপুর চিনিকল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বুলু আমিন। তিনি বলেন, ১৫টি চিনিকলের মধ্যে ৯টি চালু করলেও এখনো ৬টি বন্ধ রয়েছে। তার মধ্যে শ্যামপুর চিনিকল একটি। অবিলম্বে এটি চালু করে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধসহ পাঁচ দফা দাবি আদায় না হলে ২৪ ডিসেম্বর থেকে রেলপথ, রাজপথ অবরোধসহ আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

এর আগে গত ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর চিনিকল খুলে দেওয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান কর্মসূচি, প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ ও সমাবেশ করেছেন আখচাষি ও শ্রমিক-কর্মচারীরা।

১ ডিসেম্বর দেশের ১৫টি চিনিকলের মধ্যে ৬টি চিনিকলের মাড়াই বন্ধ রেখে ৯টি চিনিকলের মাড়াই চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন। চিনিকলটিতে চাকরি করে হাজারো শ্রমিক, কর্মচারী–কর্মকর্তা জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।

রংপুর জেলার একমাত্র ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান শ্যামপুর চিনিকল। ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই চিনিকল দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে জাতীয়করণ করেন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে চিনিকলটির অংশীদারত্ব রয়েছে। চিনিকলটিতে চাকরি করে হাজারো শ্রমিক, কর্মচারী–কর্মকর্তা জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।

শ্যামপুর চিনিকল আখচাষি কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান সাগর বলেন, ৮ থেকে ১০ হাজার আখচাষি আখ চাষ করে আর্থিক সচ্ছলতা পেয়েছেন। তার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসায়ী, রিকশাওয়ালা, নৈশপ্রহরী ও আরও অনেকে এই চিনিকলের ওপর নির্ভর করে জীবন-জীবিকা পরিচালনা করে আসছেন। শ্যামপুর চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারীরা চার-পাঁচ মাসের বেতন-ভাতা না পেয়ে, অবসরকালীন শ্রমিক-কর্মচারীরা অবসরকালীন গ্র্যাচুইটি ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। আখচাষিদের অবস্থাও খারাপ। তারপরও তাঁরা সবাই মিলে ‘মায়ের মতো’ এই চিনিকলকে আগলে রেখেছেন।

১ ডিসেম্বর দেশের ১৫টি চিনিকলের মধ্যে ৬টি চিনিকলের মাড়াই বন্ধ রেখে ৯টি চিনিকলের মাড়াই চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন। লোকসান কমানোর লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানায় করপোরেশন।