শ্রমিকদের কারণে কুষ্টিয়ায় ট্রেনের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত

রেলওয়ের ট্রলির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে একটি মালবাহী ট্রেনের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে কুষ্টিয়া শহরের মিলপাড়া এলাকায়ছবি: তৌহিদী হাসান

বারবার বলার পরও শ্রমিকেরা রেললাইন থেকে ট্রলি সরিয়ে না নেওয়ায় কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী রেলপথের কুষ্টিয়া রেলস্টেশন–সংলগ্ন মিলপাড়া এলাকায় ট্রেনের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে কুষ্টিয়া রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার এম এ জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পাকশী রেল বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ বীর বল বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনায় পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে । আগামীকাল শনিবার ঘটনাস্থলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আসবেন।

এদিকে এ দুর্ঘটনার কারণে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী ও রাজশাহী-টুঙ্গিপাড়া রেলপথে পাঁচটি ট্রেনের চলাচল বন্ধ রয়েছে।

শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে মিলপাড়া এলাকায় মালবাহী একটি ট্রেনের সঙ্গে রেলের ট্রলির সংঘর্ষ হয় । এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে মালবাহী ট্রেনের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয় এবং ট্রলিটি চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। বিকেল পাঁচটায় ঈশ্বরদী থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন এসে লাইনচ্যুত বগিগুলো উদ্ধারের কাজ শুরু করে। এদিকে এ দুর্ঘটনার কারণে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী ও রাজশাহী-টুঙ্গিপাড়া রেলপথে পাঁচটি ট্রেনের চলাচল বন্ধ রয়েছে।

দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ করছিলেন কুষ্টিয়া স্টেশনে কর্মরত এক কর্মচারী (লাইনম্যান) মো. ইব্রাহীম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ট্রলির শ্রমিকদের বারবার ট্রলি সরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ট্রলির শ্রমিকেরা ট্রলি না সরিয়ে নিয়ে উল্টো লাল নিশানা দিয়ে ট্রেন থামানোর কথা বলেন। কিন্তু ততক্ষণে ট্রেন ঢুকে পড়ায় ঘটে দুর্ঘটনাটি।

রেলওয়ের ট্রলির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে একটি মালবাহী ট্রেনের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়। শুক্রবার দুপুরে কুষ্টিয়া শহরের মিলপাড়া এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়া রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার এম এ জামান প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার বিকেলের আগে এ রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে না।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, মালবাহী ট্রেনটিতে মোট ২২টি বগি আছে। প্রতিটি বগিতে গম ছিল। ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে ফরিদপুর যাচ্ছিল। ট্রেনের চালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কুষ্টিয়া স্টেশন থেকে ক্লিয়ারিং পাওয়ার পর তিনি ট্রেনটি নিয়ে কুমারখালীর দিকে যাচ্ছিলেন। ২০০ গজ যাওয়ার পর মিলপাড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে তিনি দেখতে পান রেললাইনের ওপর রেলের একটি ট্রলি দাঁড়ানো অবস্থায় আছে। কিন্তু ট্রেন থেকে ট্রলিটি মাত্র ৫০ গজ দূরে থাকায় তিনি ব্রেক করেও ট্রেন থামাতে পারেননি।

মিলপাড়ার বাসিন্দা সুদীপ বাগচী বলেন, ‘আমি রেললাইনের পাশেই দাঁড়িয়েছিলাম। সংঘর্ষের সময় ট্রলিটি ট্রেনের পাঁচটি বগির নিচ দিয়ে চলে যায়। এরপর একপর্যায়ে ট্রেনটি থেমে যায়। পরে পেছনের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে।’

কুষ্টিয়ার স্টেশনমাস্টার এম এ জামান বলেন, ট্রলির কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এখানে ট্রেনের কোনো দায় নেই। এ রেলপথে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেসসহ মোট পাঁচটি ট্রেন চলাচল করে।