শ্রীমঙ্গলে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চা বাগানের শ্রমিকদের দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে মঙ্গলবার শ্রীমঙ্গলে চা-বাগানের শ্রমিকেরা কর্মবিরতি পালন করেন। সকালে ভাড়াউড়া চা-বাগানে
প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দুর্গাপূজার আগেই মজুরি বৃদ্ধি ও সেই অনুযায়ী বেতন-বোনাস পরিশোধের দাবিতে ২৬টি চা-বাগানে দুই ঘণ্টাব্যাপী কর্মবিরতি পালন করেছেন শ্রমিকেরা। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালিত হয়।

ভাড়াউড়া চা-বাগান, ভুরভুরিয়া চা-বাগান, জাগছড়া চা-বাগান, খাইছড়া চা-বাগান, সোনাছড়া চা-বাগান, কালীঘাট চা-বাগান, লাখাইছড়া, মিজাপুর, সাতগাঁওসহ ২৬টি চা-বাগানে একযোগে শ্রমিকেরা কর্মবিরতি পালন করেন।

সকালে উপজেলার ভাড়াউড়া চা-বাগানে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকেরা চা-বাগানের দুর্গাবাড়ির সামনে অবস্থান নিয়েছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চা শ্রমিক ইউনিয়নের বালিশিরা ভ্যালি সভাপতি বিজয় হাজরা, চা শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দী প্রমুখ।

কর্মবিরতি পালনকারী শ্রমিকেরা বলেন, বর্তমানে দিনে ১০২ টাকা মজুরি দিয়ে সংসার চালানো সম্ভব হচ্ছে না। সন্তানের লেখাপড়ার খরচ বহন করাও সম্ভব হচ্ছে না। জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে কিন্তু মজুরি সেই অনুযায়ী বাড়েনি।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বালিশিরা ভ্যালি সভাপতি বিজয় হাজরা জানান, মালিকপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে ৩০০ টাকা মজুরি দাবি করা হয়েছিল। মালিকপক্ষ ১২০ টাকা দিতে রাজি হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ ২৩ মাস অতিক্রান্ত হলেও এখনো ১০২ টাকা হারে মজুরি দেওয়া হচ্ছে।

বিজয় হাজরা বলেন, ‘দুর্গাপূজার আগেই চা শ্রমিকদের নতুন মজুরিসহ বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের দাবি জানাই। আমাদের দাবি না মানলে আগামীকাল (বুধবার) সারা দেশের চা-বাগান শ্রমিকেরা কর্মবিরতি পালন করবেন। এ ছাড়া দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

এ সম্পর্কে ফিনলে টি কোম্পানির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিইও) তাহসিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, সরকার মজুরি নির্ধারণ করে দেওয়ার জন্য নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করে দিয়েছে। গত ডিসেম্বর থেকে এই পর্যন্ত বোর্ডের সঙ্গে ৫টি বৈঠক হয়েছে। গত মার্চ থেকে করোনার কারণে সভা অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। তা ছাড়া করোনাকালে অন্যদের মতো চা শিল্পেও অনেক ক্ষতি হয়েছে। গত বছরের উৎপাদিত অনেক চা-পাতা অবিক্রীত রয়ে গেছে। যেহেতু মজুরি বোর্ড কাজ করছে, সেহেতু হঠাৎ করে শ্রমিকদের কর্মবিরতি কর্মসূচি অযৌক্তিক।