সংখ্যালঘুদের কাছে উড়ো চিঠি পাঠানোর ঘটনায় আটক ৪

মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার দুটি গ্রামে সংখ্যালঘুদের কাছে উড়ো চিঠি পাঠানোর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে মামলা প্রক্রিয়াধীন। তবে আটক ব্যক্তিরা কোনো উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত নন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। রোববার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন মাগুরার পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম।

পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটক চার ব্যক্তি হলেন শ্রীপুর উপজেলার চৌগাছি গ্রামের ইউসুফ বিশ্বাস ওরফে ইবনুল (৩৪), চর মহেশপুর গ্রামের কোরবান আলী (৩৬), দারিয়াপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান (৪৮) এবং কচুয়া গ্রামের মোস্তাকিম বিল্লাহ (২৮)। তাঁদের মধ্যে ইউসুফ বিশ্বাস এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। অন্যরা সবাই চিঠিটি বিতরণের সঙ্গে জড়িত।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ইউসুফ ঢাকা কলেজে পরিসংখ্যান বিভাগে স্নাতকের ছাত্র ছিলেন। কিন্তু স্নাতক শেষ না করেই তিনি ঢাকায় দুটি মাদ্রাসায় ধর্মীয় শিক্ষা নিতে শুরু করেন। পরে তিনি এলাকায় কৃষিকাজের পাশাপাশি স্থানীয়দের ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া এবং প্রচারের উদ্যোগ নেন। তারই অংশ হিসেবে সংখ্যালঘুদের বাড়িতে ওই চিঠি দেওয়া হয়।

শুক্রবার রাতে শ্রীপুর উপজেলার চরগোয়ালদহ ও মালাইনগর গ্রামে প্রায় অর্ধশত সংখ্যালঘু পরিবারের কাছে উড়ো চিঠি পাঠিয়েছিলেন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা।

 শুক্রবার রাতে শ্রীপুর উপজেলার চরগোয়ালদহ ও মালাইনগর গ্রামে প্রায় অর্ধশত সংখ্যালঘু পরিবারের কাছে উড়ো চিঠি পাঠিয়েছিলেন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা। হাতে লেখা সেই চিঠিতে ইসলাম গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। শনিবার ওই এলাকায় সমাবেশ করে এলাকাবাসীকে উদ্বিগ্ন না হওয়ার আহ্বান জানান মাগুরা–১ আসনের সাংসদ সাইফুজ্জামান শিখর।

এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানা–পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে কি না, তা জানতে একটি আদেশ দিয়েছেন মাগুরার একটি আদালত। রোববার বিকেলে শ্রীপুর আমলি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবা শারমীন ওই আদেশ দেন।

পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম জানান, রোববার আটক ওই ব্যক্তিদের কোনো উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা এখনো পাওয়া যায়নি। তাঁরা যে প্রচারপত্র বিলি করেছেন তাতে হিংসা, ক্রোধ বা আক্রমণাত্মক কোনো ভাষা ব্যবহার করা হয়নি। তবে প্রচারপত্রে কিছু কথা সংখ্যালঘু ব্যক্তিদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ওই অভিযোগেই তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। এ ঘটনায় স্থানীয় ব্যক্তিদের উদ্বিগ্ন না হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।