সংবাদ সম্মেলন করে কৃষিজমি রক্ষার দাবি

কৃষিজমি রক্ষায় সংবাদ সম্মেলন। রোববার দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে।
ছবি: প্রথম আলো

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় তিন ফসলি কৃষিজমি রক্ষার দাবিতে আজ রোববার সংবাদ সম্মেলন করেছেন কৃষকেরা। দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে কোষাভাঙ্গা কৃষিজমি রক্ষা আন্দোলন কমিটির ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

এ ব্যাপারে ইউএনও মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। সেখানে বাঁধ দেওয়ার কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কৃষিজমি রক্ষায় প্রশাসন আইনগতভাবে এগোচ্ছে।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান কমিটির সভাপতি আলতাফ হোসেন। তিনি বলেন, জেলা সদরের আটিগ্রাম ইউনিয়নের কোষাভাঙ্গা গ্রামে তরফ আটিগ্রাম মৌজায় প্রায় চার হাজার একর তিন ফসলি কৃষিজমি রয়েছে। সারা বছর এসব জমিতে কৃষকেরা বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।

আলতাফ বলেন, সম্প্রতি স্থানীয় কয়েকজন মধ্যস্থতাকারী উচ্চমূল্যে কিছু কৃষকের প্রায় ৫০ বিঘা কৃষিজমি একটি প্রতিষ্ঠানকে কিনে দেন। এরপর দ্রুত খননযন্ত্র দিয়ে ফসলের মাঠের চারদিকে উঁচু করে বাঁধ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ফসলের মাঠে যেতে সরকারি রাস্তাটিও কেটে কৃষকদের যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই বাঁধের মাঝে প্রায় ৫০০ বিঘা কৃষিজমি রয়েছে। এসব জমিতে কৃষকেরা এখন যেতে পারছেন না। এই জমি বিক্রি করতে স্থানীয় দালাল চক্র কৃষকদের নানাভাবে চাপ দিচ্ছেন। ভয়ভীতিও দেখানো হচ্ছে।

এর আগে গত ২৯ ডিসেম্বর কৃষিজমি রক্ষার দাবিতে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত আবেদন করেন ৮৪ জন কৃষক।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এর আগে গত ২৯ ডিসেম্বর কৃষিজমি রক্ষার দাবিতে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত আবেদন করেন ৮৪ জন কৃষক। স্থানীয় প্রশাসন সরেজমিনে গিয়ে সরকারি রাস্তার ওপর বাঁধ দেওয়া অংশটি অপসারণ করে। কৃষিজমিতে মাটি ফেলে ভরাট করতে নির্দেশ দেয় উপজেলা প্রশাসন।

আলতাফ হোসেন বলেন, প্রতিষ্ঠানটির নামে কেনা জমি ছাড়াও আশপাশে অন্যের কৃষিজমি কৌশলে ভরাট করার পাঁয়তারা করছে দালাল চক্রটি। এতে ভুক্তভোগী কৃষকেরা তাঁদের জমি ওই প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য হবে। নিষেধাজ্ঞার পরও বাঁধের মাঝে আটকা পড়া প্রায় ৫০০ বিঘা কৃষিজমি ভরাট করার প্রস্তুতি নিয়েছে দালাল চক্রটি।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সংবাদ সম্মেলনে সম্পদ চন্দ্র সরকার বলেন, কৃষিবান্ধব বর্তমান সরকার কৃষিজমি রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। তিন ফসলি জমিতে শিল্পকারখানা স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এখানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার একর কৃষিজমি নষ্ট করে ওই দালাল চক্র শিল্পকারখানা নির্মাণের জন্য কৃষকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জমি বিক্রি করতে বাধ্য করছে।

সংবাদ সম্মেলনে ১৮-২০ জন কৃষক উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা কৃষিজমি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করেন। একই সঙ্গে কৃষিজমিতে যাতায়াতে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।