‘সততা স্টোরের’ শহিদুল পেলেন দেশসেরা শিক্ষকের স্বীকৃতি
দেশসেরা প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন রাজবাড়ীর শহিদুল ইসলাম। তিনি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ‘জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ–২০১৯’ উপলক্ষে তাঁকে দেশের সেরা প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আম্বিয়া সুলতানা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ইউএনও আম্বিয়া সুলতানা বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের (বিদ্যালয়-২) একটি পত্র সোমবার সন্ধ্যার কিছু সময় আগে এসেছে। তালিকায় প্রথম নাম রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির শহিদুল ইসলাম।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শহিদুল ২ ডিসেম্বর ১৯৯৮ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। তিনি বিদ্যালয়ে প্রথম সততা স্টোর চালু করেন। বিক্রেতাবিহীন এই দোকান ছিল দেশের প্রথম। বিষয়টি বিভিন্ন মহলে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে। পরবর্তী সময়ে তা জাতীয় পর্যায়ে রোল মডেল হিসেবে পরিণত হয়। জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ–২০১৮–তে তাঁর স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি জেলার সেরা প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে নির্বাচিত হয়। গত বছর তিনি প্রথমে উপজেলা পর্যায়ে সেরা প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন। এরপর জেলা, বিভাগীয় পর্যায়েও সেরা শিক্ষক নির্বাচিত হন। রোববার তাঁকে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সেরা প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত করা হয়। সোমবার বিকেলে ইউএনওর কাছে মন্ত্রণালয় থেকে মেইল পাঠিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সাল থেকে ছয় বছর যাবৎ তিনি কোনো নৈমিত্তিক ছুটি ভোগ করেননি। বিদ্যালয়ে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার, গ্রন্থাগার, নামাজঘর, শহীদ মিনার, উপকরণ কর্নার, মিনা–রাজু পার্ক, পতাকামঞ্চ, ভূগোলক, রিডিং কর্নার, হাসান আলী স্কয়ার, আমাদের ভুবন, পশুপাখির ম্যুরালসহ নানাবিধ স্থাপনা। প্রাথমিক সমাপনীতে ভালো ফলাফল লাভের জন্য তিনি বিদ্যালয়ের সময়সূচির বাইরে বৈকালিক বা নৈশকালীন বিদ্যালয় চালু করেছেন।
শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি অভিভূত। অসাধারণ অনুভূতি। এই অর্জনের জন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পরিচালনা কমিটি ও এলাকাবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ। এই অর্জনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে যেন বাকি জীবন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারি।’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছরের মার্চের শেষ সপ্তাহে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ পালন করা হয়। ওই সময় জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এ বছর করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে নির্দিষ্ট সময়ে ২০১৯ সালের পদক ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি।