‘সত্যবচনে’ এবার সাবেক মন্ত্রী ও নেতাদের ওপর চটলেন সেতুমন্ত্রীর ভাই

আবদুল কাদের মির্জা
ফাইল ছবি

‘সত্যবচনে’ এবার দলের সাবেক মন্ত্রী ও নেতাদের ওপর চটেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য, আজকে আমি যখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অপরাজনীতির বিরুদ্ধে কথা বলি। আমি যখন নোয়াখালীর ত্যাগী নেতাদের কথা বলি, তখন জাতীয়ভাবে আমাকে বলা হয় আমি নাকি পাগল, উন্মাদ।’ আজ শনিবার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের উপজেলা গেটের পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘১৬ তারিখে আমি প্রমাণ করব, আমি পাগল নাকি?’ তিনি কারও নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘যিনি আমাকে পাগল বলেছেন, গোপালগঞ্জে যেখানে ৯৯ ভাগ আওয়ামী লীগ, সেখান থেকে তিনি এমপি হইছেন। আগে মন্ত্রী ছিলেন, এখন নাই। অনিয়ম না করলে তাঁকে মন্ত্রী বানানো হয়নি কেন? উনি আমাকে বলেন আমি পাগল, উন্মাদ। আরেকজন নেতা বলেন, আমার দায়িত্বশীলতার নাকি অভাব আছে। আপনি দায়িত্বশীল ব্যক্তি, আপনার বাড়ি কুষ্টিয়া।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের প্রতি ইঙ্গিত করে আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা হইছে। আপনি দায়িত্বশীল লোক? এগুলো বন্ধ করেন। কী করবেন, জেলে নেবেন? বহিষ্কার করবেন? মেরে ফেলবেন? আমি বলব। আমি বলেছি নোয়াখালী, ফেনীর অপরাজনীতির কথা। আপনারা কেন নিজেদের গায়ের ওপর নিচ্ছেন? আজকে আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায়। কেন অসহায়? শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আজকে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে।’

এই পথসভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিনসহ উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

পথসভায় সেতুমন্ত্রীর ভাই বলেন, ‘আজকে দলের ভেতর চাটুকারেরা রাত–দিন শেখ হাসিনাকে উত্ত্যক্ত করছেন। তাঁকে দল দেখতে হয়, দেশ দেখতে হয়, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হয়। তাঁর কি সময় আছে কোম্পানীগঞ্জ, নোয়াখালী, ফেনীর দেখার? এগুলো কার দায়িত্ব? মন্ত্রীর দায়িত্ব। না হলে আপনাদের কাজ কী? দেশের মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা সব ব্যবস্থা করতে হবে শেখ হাসিনাকে। আপনাদের কাজ কী? আমি সবার কথা বলি না, ভালো লোক মন্ত্রীর মধ্যেও আছে। না হলে দেশ চলে কীভাবে? প্রশাসনে আমলাদের ভেতরও ভালো লোক আছে। কিন্তু অধিকাংশ আজকে শেখ হাসিনাকে অসহযোগিতা করছেন।’

পথসভায় আবদুল কাদের মির্জা দাবি করেন, ‘এখানে আজকে অস্ত্রের ঝনঝনানি চলছে। কবিরহাটে একটি বাড়িতে, ফেনীতে একটি বাসায় বসে নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র চলছে। তারপর এখানে কিছু কিছু লোকের কাছে অস্ত্রশস্ত্র পাঠানো হয়েছে। গত পরশু চট্টগ্রাম থেকে কবিরহাটে অস্ত্র এসে পৌঁছেছে। এখানকার প্রশাসনের কাছে বলে লাভ নেই। তারা মাসোহারা খায়, তাদের কাছে বলে লাভ নাই।’ তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় এখানে ঘোষণা করছি, কোম্পানীগঞ্জের নির্বাচনের রং লাগানোর জন্য কোনো ষড়যন্ত্র যদি চলে, কোনো মায়ের বুক যদি খালি হয়, আমার একটা কর্মীর গায়ে যদি কেউ হাত দেয়, এখানে কোনো অস্থিশীল পরিস্থিতি যদি সৃষ্টি হয়, কারও ঘরে যদি আগুন লাগানো হয়, তাহলে এর সব দায়িত্ব এখানকার ডিসি, এসপিকে নিতে হবে। জনতার কাতারে আপনাদের বিচার করা হবে।’