সভাপতি পদে প্রার্থী কারা

আগামী শনিবার সম্মেলন। এ জেলায় আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১৫ সালের ৮ মার্চ।

দুদিন পরই মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। তবে শেষ মুহূর্তে এসেও সভাপতি পদে প্রার্থী কারা আছেন, সে বিষয়ে দায়িত্বশীল কেউ মুখ খুলছেন না।

নেতারা বলছেন, কৌশলগত কারণেই তাঁরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হিসেবে বেশ কয়েকজন নেতা নিজেদের নাম প্রকাশ করেছেন। দলের শীর্ষ পদ পেতে সাধ্য অনুযায়ী জেলার ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগও করছেন তাঁরা।

আগামী শনিবার মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। এ জেলায় আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১৫ সালের ৮ মার্চ। মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার চার বছরের বেশি সময় পর হতে যাওয়া এ সম্মেলনকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। আসন্ন কমিটির নেতৃত্বেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে আওয়ামী লীগ। নির্বাচন ঘিরে বিরোধীদের আন্দোলন-সংগ্রাম মোকাবিলা করতে হবে এই নেতৃত্বকে। এ কারণে নতুন কমিটির নেতৃত্বে কারা আসছেন, সাংগঠনিক কী পরিবর্তন আসতে পারে, তা নিয়ে জল্পনাকল্পনা চলছে তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যে।

মিছিল হবে জেলা আওয়ামী লীগের সমন্বয়ে। কোনো ব্যক্তি আলাদাভাবে মহড়া দেবেন না। এটা সারা দেশের মধ্যে শৃঙ্খলার একটা নজির হয়ে থাকবে।
পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু, সাধারণ সম্পাদক, মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগ

ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। ঈদুল ফিতরের পর থেকে নেতা-কর্মীদের ভিড়ে জমজমাট শহরের জামরুলতলা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়। প্রতিদিন সম্মেলন আয়োজক কমিটি একাধিক বৈঠকে বসছে। মঞ্চ প্রস্তুতের কাজের পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে কেন্দ্রীয় নেতাদের স্বাগত জানাতে লাগানো হচ্ছে ব্যানার ও ফেস্টুন।

জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন হবে শহরের নোমানী ময়দানে। আর দুপুরের পর দ্বিতীয় অধিবেশন হবে শেখ কামাল ইনডোর স্টেডিয়ামে। সম্মেলন উদ্বোধন করার কথা রয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের। জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আ ফ ম আবদুল ফাত্তাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ। জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলীয় শৃঙ্খলা ধরে রাখতে সম্মেলন ঘিরে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে কোনো ব্যক্তি বা প্রার্থীর পক্ষে ব্যানার, পোস্টার টাঙানোর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা। কোনো নেতার পক্ষে মিছিল, মোটর শোভাযাত্রা ও মহড়া দিতেও নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু বলেন, এটা সারা দেশের মধ্যে শৃঙ্খলার একটা নজির হয়ে থাকবে। সম্মেলন ঘিরে ব্যানার, পোস্টার যা টাঙানো হবে, সবই জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষে। যেখানে জাতির পিতা, দলীয় প্রধান ও কেন্দ্রীয় নেতাদের বাইরে কারও ছবি থাকবে না। মিছিল হবে জেলা আওয়ামী লীগের সমন্বয়ে। কোনো ব্যক্তি আলাদাভাবে মহড়া দেবেন না।

এদিকে শেষ মুহূর্তে নেতা-কর্মীদের মধ্যে আলোচনার মূল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারা আসছেন নতুন কমিটির নেতৃত্বে। প্রকাশ্যে প্রচার না চালালেও শীর্ষ দুই পদে বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীর নাম শোনা যাচ্ছে। যেখানে সাধারণ সম্পাদক পদে নিজেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের বেসরকারিবিষয়ক সম্পাদক মিরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খুরশীদ হায়দার, প্রচার সম্পাদক শাখারুল ইসলাম, ত্রাণ ও সমাজসেবা সম্পাদক রানা আমীর ওসমান এবং জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক এনামুল হক প্রমুখ। নিজেদের প্রার্থিতার পক্ষে তাঁদের ভাষ্য সামনের চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখে তাঁরা চাইছেন নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে একটি কমিটি হোক। তাতে আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হবে। আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিতে পারে, পরীক্ষিত নেতাদের শীর্ষ পদে জায়গা দেওয়া উচিত।

অন্যদিকে সভাপতি পদে যেসব নেতার নাম শোনা যাচ্ছে, তাঁরা হলেন বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আ ফ ম আবদুল ফাত্তাহ, সহসভাপতি আবু নাসির বাবলু, মুন্সী রেজাউল ইসলাম, সৈয়দ শরিফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুজ্জামান ও মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য বীরেন শিকদার প্রমুখ। তাঁদের মধ্যে তিনজনের সঙ্গে কথা হয়েছে এই প্রতিবেদকের। তাঁরা কেউই নিজেদের প্রার্থী হিসেবে স্বীকার করেননি। তাঁদের একজন আবু নাসির বাবলু বলেন, ‘মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগে অনেক যোগ্য নেতা আছেন। এখানে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা আছে। তবে কোনো বিভক্তি নেই।’