সমতা ও নারীর কাজের মূল্যায়নে বিতর্ক উৎসব

একশনএইড-প্রথম আলো বন্ধুসভা জাতীয় বিতর্ক উৎসবে বিজয়ী দলের সদস্যদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। গতকাল সন্ধ্যায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কীর্তনখোলা মিলনায়তনে।  প্রথম আলো
একশনএইড-প্রথম আলো বন্ধুসভা জাতীয় বিতর্ক উৎসবে বিজয়ী দলের সদস্যদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। গতকাল সন্ধ্যায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কীর্তনখোলা মিলনায়তনে। প্রথম আলো

ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় গতকাল শুক্রবার একশনএইড-প্রথম আলো বন্ধুসভা জাতীয় বিতর্ক উৎসবের বরিশাল আঞ্চলিক পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় দল চ্যাম্পিয়ন ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দল রানার্সআপ হয়ে।

‘গৃহস্থালির সেবামূলক কাজের মূল্যায়ন, আনবে সমতা করবে উন্নয়ন’—এই স্লোগানে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিতর্ক উৎসব শুরু হয়। এর আগে পায়রা উড়িয়ে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. ছাদেকুল আরেফিন ও বরিশালের জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কীর্তনখোলা মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য বলেন, ‘১৯৯৯ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার হাত ধরেই বন্ধুসভার পথচলা শুরু হয়। তখন ফিজিকসের এক শিক্ষার্থী বন্ধুসভার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সব সময় চুপচাপ বসে থাকত। কয়েক বছর পর যখন সেই শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ ডিগ্রি নেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিদায় নিচ্ছিল, তখন সে বলছিল, “স্যার, আগে আমি ১০ জন লোকের সামনে কথা বলতে ইতস্তত করতাম, বন্ধুসভার কল্যাণে এখন আমি ১০০ জনের সামনেও কথা বলতে ইতস্তত করি না।” এ জন্য শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমের অংশ নিতে হবে।’

পরে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি এস এম অজিয়র রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। রূপকল্প ২০৪১ আমাদের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের তরুণদের প্রস্তুতি নিতে হবে। তাদের দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করতে হবে। সবাইকে মনে রাখতে হবে, আমাদের জনগোষ্ঠীর অর্ধেক নারী। এই নারীদের উৎপাদনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা না গেলে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা দুরূহ হবে। এ জন্য নারীদের কাজে সহযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে পুরুষদের এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি নারীদেরও শিক্ষিত ও দক্ষ হয়ে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বন্ধুসভার জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সাইদুজ্জামান রওশন বলেন, ‘নারী-পুরুষ সমানতালে হাতে হাত রেখে বাংলাদেশের উন্নয়নে অংশ নিক, এটা আমরা চাই।’

অনুষ্ঠানে একশনএইড বাংলাদেশের কর্মসূচি কর্মকর্তা নূরে জান্নাত বলেন, নারীর গৃহস্থালির কাজকে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন না হওয়ার কারণে নারীরা প্রতিনিয়ত বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।

বিতর্ক উৎসবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিএল কলেজ, বিএম কলেজ, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ, বরিশাল আবদুর রব সেরনিয়াবাত টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, বরিশাল আবদুর রব সেরনিয়াবাত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বরিশাল সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ ও সরকারি বরিশাল কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।