সময়ের আগেই সুমিষ্ট তরমুজ

খেত থেকে আনা তরমুজ এনে স্তূপ করে রাখা হয়েছে টেকনাফ বাসস্টেশন এলাকার একটি আড়তে।  প্রথম আলো
খেত থেকে আনা তরমুজ এনে স্তূপ করে রাখা হয়েছে টেকনাফ বাসস্টেশন এলাকার একটি আড়তে। প্রথম আলো

অসময়ে নতুন ফল তরমুজের স্বাদ পাওয়া যাচ্ছে কক্সবাজারের টেকনাফে। বিক্রিও হচ্ছে কেজি হিসেবে, তাও চড়া দামে। ফলে টেকনাফ পৌরসভার বাস টার্মিনাল, পুরাতন বাসস্টেশন ও জিরো পয়েন্ট এলাকায় কয়েক দিন ধরেই বিক্রি হচ্ছে মৌসুমি ফল তরমুজ। এই তরমুজ সুস্বাদু ও মিষ্টি, তেমন বড় না হলেও মাঝারি আকারের।

গতকাল রোববার বেলা একটার দিকে শহরের বাসস্টেশন ও টার্মিনাল এলাকায় হাজারখানেক তরমুজ স্তূপ করে রেখে বিক্রি করছেন স্থানীয় ফল ব্যবসায়ী মোহাম্মদ রফিক, সব্বির আহমদ, নজির আহমদ, আবুল হাশিম, মোহাম্মদ ইয়াসিন, আব্দুল্লাহ ও আব্দুল সালাম।

দেখা গেছে, অল্প সময়ের মধ্যে প্রায় ৫০টি মতো তরমুজ বিক্রি করেছেন। কিন্তু তরমুজ দেখে ক্রেতারা আগ্রহ নিয়ে কিনতে কাছে এলেও অনেকে কেজি ধরের কথা শুনে উল্টো পথে হাঁটছেন। তরমুজ আবার কেজি মাপে বিক্রি হয় নাকি উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেন ক্রেতারা।

তরমুজ বিক্রেতা নজির আহমদ ও মোহাম্মদ ইয়াসিন বলেন, ‘আগাম ফলনের খবর পেয়ে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের হারিয়াখালী ও টেকনাফ সদরের হাবিরছড়া এলাকা থেকে তরমুজ সংগ্রহ করে তাঁরা কয়েকজন টেকনাফের বাজারে নিয়ে এসেছেন। হারিয়াখালী থেকে ৯৫ হাজার টাকায় মাঝারি ও ছোট আকারের এক হাজারটি তরমুজ কিনে এনেছি। গড়ে প্রতিটির দাম পড়েছে ৯৫ টাকা করে। প্রতিটি তরমুজের ওজন ৩-৬ কেজি পর্যন্ত। দাম রাখা হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ টাকা।’

চাষি মো. আমিন বলেন, অন্যান্য স্থানের তুলনায় প্রায় তিন-চার মাস আগে তরমুজ চাষে নামা হয়। কারণ ওই সময় বৃষ্টি হলেও পানি জমে না থাকায় এলাকার সমুদ্রসৈকত ও পাহাড়ি ঢালু জমিতে চাষাবাদ শুরু করা হয়। এক কানি (৪০ শতক) জমির তরমুজখেতে ২ হাজার ২০০টি তরমুজের থালি করা হয়। প্রতি থালিতে সার, কীটনাশক, বীজ ও শ্রমিক বাবদ খরচ হয় প্রায় ৪০ টাকা। সে হিসাবে প্রতি কানিতে খরচ যায় প্রায় ৭০ হাজার টাকা। ভালো ফলন হওয়ায় প্রথম দফায় ৫০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করা হয়েছে।  বাকি তরমুজ বিক্রি করে আরও তিন-চার লাখ টাকা পাওয়ার আশা করছেন।

বাসস্টেশন এলাকায় তরমুজ কিনতে আসা ৬৫ বছরের আমির হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় হওয়ায় তরমুজে কোনো ধরনের রাসায়নিক  মেশানোরও সুযোগ নেই। তাই কেজিতে হলেও চার কেজি ওজনের ২০০ টাকায় একটি তরমুজ কিনলাম।’

কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় এবার তরমুজের চাষাবাদ হচ্ছে। গত বছর ২২৩ একর জমিতে চাষাবাদ হলেও চলতি মৌসুমে ৩৫০ একর জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে।

 টেকনাফ উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম কুতুবী প্রথম আলোকে বলেন, টেকনাফ সমুদ্রসৈকত ও পাহাড়ি কিছু ঢালু পতিত জমিতে আগাম তরমুজের ফলন হয়েছে। সাধারণত তরমুজ বাজারে আসবে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে। আগাম বাজারে আসায় চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।