সরকারি জমি উদ্ধারে যাওয়ায় ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের ওপর হামলা, আটক ১০

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার হরিনাপাটি গ্রামে সরকারি কর্মকর্তা ও পুলিশের ওপর হামলায় জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে তোলা ছবি
প্রথম আলো

সুনামগঞ্জে সরকারি জমি উদ্ধার করার সময় গ্রামবাসী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়েছে। গ্রামবাসীর অতর্কিত হামলা থেকে রক্ষা পেতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় পুলিশ ১০ জনকে আটক করেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলার রঙ্গারচর ইউনিয়নের হরিণাপাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

হামলার শিকার হওয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নাম আরিফ আদনান। তিনি সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে কর্মরত। গ্রামবাসী তাঁর কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপরও হামলা চালিয়েছেন। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার হরিণাপাটি গ্রামের পাশে সুরমা নদীর তীরে সরকারি জমিতে ১৫টি ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওই গ্রামের ভূমিহীন ও দরিদ্র মানুষজন এই ঘর পাবেন। এ জন্য জমিতে মাটি ভরাট করা হয়েছে। কিন্তু গ্রামের কিছু লোক শুরু থেকে এই কাজে নানাভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে আসছেন।

আজ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ আদনান তাঁর কার্যালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে নিয়ে সেখানে যান। তখন তাঁদের সঙ্গে পুলিশ ও আনসার সদস্যরাও ছিলেন। মাটি ভরাটের কাজ শুরু করতে গেলে  গ্রামের লোকজন তাঁদের বাধা দেন। প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তারা গ্রামবাসীকে প্রায় দুই ঘণ্টা বিষয়টি বোঝান। কিন্তু দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ গ্রামবাসী উত্তেজিত হয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালান।

গ্রামবাসীর হামলায় পুলিশের একজন উপপরিদর্শক, ভূমি কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অন্যান্য পুলিশ সদস্য সামান্য আহত হয়েছেন। সহকারী কমিশনার আরিফ আদনানও হাতে আঘাত পেয়েছেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৩টি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। ঘটনার খবর পেয়ে সুনামগঞ্জ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়।
পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, গ্রামবাসী প্রশাসন ও পুলিশের ওপর হামলা করেছেন। এ ঘটনায় জড়িত ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। যাঁরাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই জমিতে যে ঘর হবে, সেগুলো ওই গ্রামের ভূমিহীন-দরিদ্র লোকজন পাবেন। কিন্তু গ্রামের কিছু লোক সেখানে সরকারি জমি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন। তাঁরাই এই হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত। আমরা তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেব।’