সরকারের সর্বাত্মক লকডাউনে বরিশালে পথঘাট ফাঁকা

লকডাউনের প্রথম দিনে বরিশাল নগরের ব্যস্ততম সদর রোড জনমানবশূন্য। ১৪ এপ্রিল দুপুরে তোলাছবি: প্রথম আলো

সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউনে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানে ফাঁকা হয়ে পড়ে বরিশাল নগরের প্রধান সড়ক এমনকি অলিগলি। ওষুধ, মুদি, কাঁচা পণ্য এবং কিছু খাবার দোকান খোলা থাকায় সেসব বাজারে কিছুটা ভিড় থাকলেও তা বরাবরের মতো না।

তবে অন্যান্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, শপিংমল সবকিছুই বন্ধ আছে। নগরের রাস্তাঘাটেও মানুষের আনাগোনা নেই। সড়কে রিকশা, মোটরসাইকেল ও জরুরি সেবার গাড়ি চলাচল করলেও গণপরিবহন নেই। অতি প্রয়োজন ছাড়া মানুষজন ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।

বিভাগের জেলাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে নগরের মধ্যে মানুষজনের প্রবেশ ঠেকাতে নগরের তিনটি প্রবেশদ্বার নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, কালিজিরা সেতু এবং দপদপিয়া সেতু এলাকায় চেকপোস্ট স্থাপন করেছে পুলিশ। অতি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে নগরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না পুলিশ। এ ছাড়া লেবুখালী ফেরিঘাট, নগরের নথুল্লাবাদ, রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড এসব এলাকায় পুলিশের টহল ছিল লক্ষণীয়। ঢাকা-বরিশাল এবং বরিশাল থেকে কুয়াকাটা মহাসড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টেও পুলিশের সরব উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। একই সঙ্গে বরিশাল জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জেলার ১০টি উপজেলায় সর্বাত্মক লকডাউন কার্যকর করতে সকাল থেকেই সতর্ক অবস্থায় ছিল। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও মাঠে ছিলেন।

লকডাউনের প্রথম দিনে বরিশালের বাকেরগঞ্জে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের লেবুখালী ফেরিঘাটে পুলিশের চেকপোস্ট
প্রথম আলো

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে নগরের বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে অপ্রয়োজনে বের হওয়া লোকজনকে ঘরে ফিরে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে।

লকডাউন কার্যকর করতে বরিশাল নগরে পৃথক দুটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাভেদ হোসেন চৌধুরী ও নিশাত ফারাবীর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত নগরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে লকডাউন অমান্য করে খোলা দোকানপাঠ বন্ধ করেন। এ সময় লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করায় চার ব্যক্তিকে এক হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মো. জাভেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, করোনা মহামারি রোধে সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউন বাস্তবায়নে জনস্বার্থে প্রতিদিনই এই অভিযান চলবে।

নগরের পাইকারি পণ্যের বাজার পোর্ট রোডে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল ও দোকানপাট খুলতে দেখা গেছে। এখানে অধিকাংশ ফল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কেনাবেচা ছিল। কিছু মাছের আড়ত, বিশেষ করে ইলিশ মাছের আড়তগুলো কেনাবেচা করেছে। তবে তা সীমিত।

বরিশালে ফল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কার্তিক দত্ত জানান, ফল পচনশীল দ্রব্য, এ ছাড়া এটি করোনার ইমিউনিটি বাড়াতে পথ্য হিসেবে কাজ করছে। এই কারণেই তাঁরা ফলের আড়ত খুলে রেখেছেন।

নগরের বাজার রোড, চৌমাথা ও নতুনবাজার এলাকায় প্রধান বাজারগুলোতে সকাল থেকে দুপুর অবধি ক্রেতাদের মোটামুটি ভিড় ছিল। অধিকাংশ বাজারের সমানে ফুটপাতেও ব্যবসা চলছে। অধিকাংশ অফিস আদালত, বন্ধ থাকায় প্রধান সড়কে উপস্থিতি ছিল কম। পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে চারুকলা বরিশাল তাদের সদর রোড কার্যালয়ে অনলাইনের মাধ্যমে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতীকী অনুষ্ঠানসূচি পালন করেছে।